সাতক্ষীরায় ৫ দিনের নবজাতক কন্যাকে খালে ফেলে হত্যার অভিযোগে মা গ্রেপ্তার

সাতক্ষীরা জেলার মানচিত্র

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৃতীয় কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ায় পাঁচ দিন পর নবজাতককে খালের পানিতে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে নৌখাল সেতুর পাশ থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নবজাতকের মা শারমিন সুলতানাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নবজাতকের দাদি খাদিজা খাতুন জানান, তাঁর ছেলে ইব্রাহিম খলিল ও পুত্রবধূ শারমিন সুলতানার আগেও দুই কন্যাসন্তান রয়েছে। গত বুধবার কলারোয়া আরোগ্য ক্লিনিকে তৃতীয় কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শারমিন। মা ও শিশুকে শনিবার সুস্থ অবস্থায় বাড়িতে আনা হয়।

সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে শারমিন পরিবারের সদস্যদের জানান, তিনি শিশুটিকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুম ভেঙে দেখেন, মেয়ে নেই। সম্ভবত কেউ চুরি করে নিয়ে গেছে। এ কথা শুনে পরিবারের লোকজন চারপাশে খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটির সন্ধান পাননি। পরে রাত আটটার দিকে শিশুটির বাবা ইব্রাহিম খলিল কলারোয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

রঘুনাথপুরের গ্রামপুলিশ জামাত আলী জানান, পরপর দুই কন্যাসন্তান হওয়ায় ইব্রাহিমের পরিবার আশা করেছিল এবার পুত্রসন্তান হবে। তৃতীয় সন্তানও কন্যা হওয়ায় পরিবারে কিছুটা অসন্তোষ দেখা দেয়। তবে ইব্রাহিম খলিল দাবি করেন, ‘ছেলেসন্তান চেয়েছিলাম, কিন্তু মেয়ে হওয়ায় পরিবারের কেউ কিছু বলেনি। বরং আমার স্ত্রী নিজেই এতে অসন্তুষ্ট ছিলেন।’

কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম জানান, শিশু চুরির বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তিনি সোমবার রাত নয়টার দিকে ইব্রাহিম খলিলকে নিয়ে তাঁদের বাড়িতে যান। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে শারমিন সুলতানা স্বীকার করেন, বারবার কন্যাসন্তান হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি শিশুটিকে বাড়ির পাশের নৌখালে ফেলে দেন। পরে তাঁর দেখানো স্থানে রাত সোয়া ১২টার দিকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় শিশুটির দাদি খাদিজা খাতুন কলারোয়া থানায় মামলা করেছেন। শারমিন সুলতানাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।