গাছ উপড়ে ফেলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগরে বিক্ষোভ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ধশতাধিক গাছ উপড়ে ফেলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে একদল শিক্ষার্থী। আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া দুইটার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বাঁচাও আন্দোলনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন এলাকা থেকে মিছিল বের করেন তাঁরা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে শহীদ মিনারের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন বিক্ষোভকারীরা।
সমাবেশে বক্তারা তিন দফা দাবি জানান। তাঁদের দাবিগুলো হলো সরকারের চিঠি উপেক্ষা করে অর্ধশতাধিক গাছ কাটার কৈফিয়ত, পূর্ণাঙ্গ মাস্টারপ্ল্যান না হওয়া অব্দি নতুন কোনো ভবনের কাজ শুরু না করা, উন্নয়ন প্রকল্পের খপ্পরে ধ্বংস হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-প্রকৃতি পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া।
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) জাবি শাখার সংগঠক সজীব আহমেদ। সমাবেশে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফারিয়া জামান বলেন, ‘বিগত কয়েক বছরে আমাদের যে ট্রমা, সেটি হলো কোথাও গাছ কাটে আর প্রশাসন বলে তারা জানে না। সেই ট্রমার ভেতর দিয়ে আমরা আরও একবার যাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে আমরা সুস্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, আগের স্বৈরাচার প্রশাসনগুলো যে প্রচেষ্টা চালিয়েছে, যে বিভাগের ভবন নির্মাণ করা হয় সে বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হতো। এই প্রচেষ্টাকে আমরা এবার ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।’
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলি।
গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণের জন্য গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সামনের জায়গায় অর্ধশতাধিক গাছ উপড়ে ফেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব ব্রাদার্স। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি অবগত নন।
বরখাস্তের দাবি
অর্ধশতাধিক গাছ উপড়ে ফেলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রকল্প পরিচালক নাসির উদ্দীন ও প্রকল্প কার্যালয়ের প্রকৌশলী আহসান হাবিবের বরখাস্তের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্রদলের একদল নেতা-কর্মী। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
বিক্ষোভ শেষে শাখা ছাত্রদলের কর্মী হামিদুল্লাহ সালমান বলেন, ‘গতকাল অবৈধভাবে ৫০টি বেশি গাছ কাটা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছ থেকে জানতে পেরেছি যে আমাদের ভিসি স্যার এবং প্রশাসন নাকি এ বিষয়ে অবগত নয়। আমরা শুনতে পেরেছি যে প্রকল্প পরিচালক নাসির উদ্দীন এবং প্রধান প্রকৌশলী আহসান হাবীবের ইন্ধনে, ইশারায় অবৈধভাবে গাছ কাটা হয়েছে। আমরা এই দুই কর্মকর্তার বরখাস্তের দাবি জানাচ্ছি।’