মারধরের অভিযোগ এনে ভিডিও বক্তব্য দেওয়া পোলিং কর্মকর্তাকে অব্যাহতি

শরীয়তপুর জেলার মানচিত্র

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে ভিডিও বক্তব্য দিয়েছিলেন এক পোলিং কর্মকর্তা। এরপর ওই বক্তব্যের ভিডিও স্থানীয় মানুষের মুঠোফোনে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে না জানানোর কারণে ওই পোলিং কর্মকর্তাকে ভোট গ্রহণের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সাদিয়া ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পোলিং কর্মকর্তা আমরা নিয়োগ করেছি। তিনি কোথাও বিপদে পড়লে, হুমকি পেলে আমাদের জানাবেন। কিন্তু সোমবার বিকেল পর্যন্ত তিনি এ বিষয়ে কাউকে কিছু জানাননি। তাই তাঁর ওই ভিডিও বক্তব্য আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। তাকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।’

দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়া ওই পোলিং কর্মকর্তার নাম মীর আবু সাঈদ। তিনি বিকেনগর ইউনিয়নের বিকেনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তাঁকে উপজেলার বড় গোপালপুর ইউনিয়নের গোপালপুর সরদারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

২ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে শিক্ষক মীর আবু সাঈদকে বলতে শোনা যায়, রোববার রাত ৯টার দিকে বিকেনগর বাজার থেকে মোটরসাইকেল প্রতীকের অচেনা এক যুবক তাঁকে ডেকে নিয়ে যান। এরপর ওই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সাঈদুর রহমান সরদারের ভাই আবদুল সরদার, মজিবরসহ ১৫-২০ জন তাঁকে মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজির পক্ষে ভোট কেন্দ্রে কাজ করতে প্রস্তাব দেন। তাঁরা তাঁকে অর্থনৈতিক প্রলোভন দেখান। তাঁদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তখন তাঁকে অপদস্ত করে গায়ে হাত তোলেন ওই ব্যক্তিরা।

এ বিষয়ে জানতে মীর আবু সাঈদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর ‘ব্যস্ত আছি’ বলে ফোন কেটে দেন। এরপর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বিকেনগর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সাঈদুর রহমান সরদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার এলাকায় কোনো শিক্ষককে ভয় দেখানোর বা মারধর করার ঘটনা ঘটেনি। কেন তিনি এমন বক্তব্য দিয়েছেন, তা বলতে পারছি না।’

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দ্বিতীয় ধাপে আগামীকাল মঙ্গলবার জাজিরা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জাজিরার ১২ ইউনিয়নে ও একটি পৌরসভার ৬৫টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে।

নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাইফুদ্দিন গিয়াস প্রথম আলোকে বলেন, কোনো পোলিং কর্মকর্তাকে মারধর করা হয়েছে, এমন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।