৫ আগস্ট পুলিশ সদস্যকে হত্যা, কিশোরসহ তিনজন গ্রেপ্তার

পুলিশ সদস্য ইব্রাহিম হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার আসামিদের বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুক। আজ শনিবার সকালেছবি: প্রথম আলো

ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানা-পুলিশের এক কনস্টেবলকে হত্যার অভিযোগে এক কিশোর ও দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা হত্যার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে পুলিশের প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে। আজ শনিবার সকালে নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এই প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এতে তিনজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুক।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ছিদ্দিকের ছেলে নাইম হোসেন (২১), জয়াগ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ভাওরকোট গ্রামের আবদুল হামিদের ছেলে ইমাম হোসেন (২২) ও সোনাইমুড়ী পৌরসভা এলাকার এক কিশোর (১৬)। গত বৃহস্পতিবার তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করার পর তাঁরা নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফসানা রুমির কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

৫ আগস্ট সোনাইমুড়ী থানায় হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ কনস্টেবল মো. ইব্রাহিমকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ১৫ আগস্ট থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।

পুলিশের ব্রিফিংয়ে বলা হয়, মামলার তদন্তের এক পর্যায়ে নাইম হোসেনকে এবং তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ইমাম হোসেনের কাছ থেকে নিহত পুলিশ কনস্টেবল ইব্রাহিমের ব্যবহৃত মুঠোফোনটি উদ্ধার করা হয়। ওই ফোনের মেসেঞ্জারে পুলিশ কনস্টেবলকে হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক একটি ভয়েস রেকর্ড পাওয়া গেছে।

পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, তিন আসামি আদালতের কাছে স্বীকার করেছেন—থানায় আক্রমণের সময় প্রাণভয়ে পলায়নরত পুলিশ সদস্যদের হত্যার উদ্দেশে তাঁরা থানার পেছনে সীমানাপ্রাচীরের কাছে অপেক্ষা করছিলেন। পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ ইব্রাহিম সীমানাপ্রাচীরের বেড়ার ফাঁক দিয়ে বের হওয়ার সময় ওই কিশোর তাঁকে বাধা দেন। এরপর ‘এই তো পুলিশ’ বলে কিশোরটি তাঁকে মারধর শুরু করেন। এ সময় ইমাম হোসেন একটি কাঠের লাঠি দিয়ে ইব্রাহিমকে আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে আরও কয়েকজন মিলে উপর্যুপরি আঘাতে ইব্রাহিমকে হত্যা করেন। হত্যার পর তাঁকে হাত-পা ধরে ঝুলিয়ে রেলক্রসিংয়ে টেনে নিয়ে গিয়ে উল্লাস করেন আসামিরা। গ্রেপ্তার আসামিদের জবানবন্দি শেষে দুজনকে কারাগারে এবং একজনকে নিরাপদ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।