ডামুড্যায় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গ করে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ

শরীয়তপুর জেলার মানচিত্র

শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এক প্রার্থীর পক্ষে সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করার পর চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রহমান ওরফে বাবলু সিকদার সংবাদ সম্মেলন করে সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের ও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তোলেন।

ওই সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারাও বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশন ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ডামুড্যা উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২৯ মে তৃতীয় ধাপে ডামুড্যা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান ওরফে বাবলু সিকদার, বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন মাঝি ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ গোলন্দাজ। শরীয়তপুর–৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক আব্দুর রশিদ গোলন্দাজকে সমর্থন করেছেন। তিনি ডামুড্যার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে নেতা-কর্মী, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য ও ভোটারদের রশিদ গোলন্দাজের পক্ষে কাজ করার জন্য বলছেন।

চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রহমান গতকাল শনিবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গ করে প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ করেছেন। আজ রোববার দুপুরে ডামুড্যা উপজেলা সদরে তাঁর নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রশিদের পক্ষে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করছেন এমন অভিযোগ তোলা হয়। প্রার্থী ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হুমায়ুন কবীর, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক।

চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমরা নিরপেক্ষ ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ চাই। সেই পরিবেশ নষ্ট করছেন সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক। তিনি নির্বাচনের আচরণবিধি ভঙ্গ করছেন। কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তা কিছুই বলছেন না। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। আমরা আশঙ্কা করছি সংসদ সদস্য বিশেষ এক প্রার্থীর পক্ষে ভোটের দিন আরও প্রভাব বিস্তার করবেন।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘আমরা সংসদ সদস্যকে অনুরোধ করেছিলাম যেহেতু আমাদের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছেন, সে জন্য আপনি কারও পক্ষে অবস্থান নিয়েন না। তিনি আমাদের অনুরোধ রাখেননি। তিনি দলের সিদ্ধান্ত, স্থানীয় নেতা-কর্মী ও ভোটারদের উপেক্ষা করে এক প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। এতে দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হতে পারে।’

জানতে চাইলে সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এলাকায় ছিলাম। গত রাতে ঢাকায় ফিরে এসেছি। নির্বাচনী এলাকায় অন্য কাজে গিয়েছিলাম। কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালায়নি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে। আমি অনেকগুলো নির্বাচন করেছি, কী করলে নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে, তা বুঝি।’

ডামুড্যা উপজেলা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এক প্রার্থী সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের একটি অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।’