চট্টগ্রাম আদালতে ৩৪৬ জন আইন কর্মকর্তা নিয়োগ, জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের কারও কারও অসন্তুষ্টি

চট্টগ্রাম আদালত ভবনফাইল ছবি

চট্টগ্রাম আদালতে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি), অতিরিক্ত পিপি, সহকারী পিপিসহ ৩৪৬ জন আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর অনুবিভাগের উপসলিসিটর (জিপি-পিপি) সানা মো. মারুফ হোসাইনের সই করা তালিকা আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে তালিকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ভূমিকা রাখা বিএনপি ও জামায়াত–সমর্থিত জ্যেষ্ঠ কয়েকজন আইনজীবীর নাম না থাকায় তাঁরা অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।

আদালত সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পিপি পদে নিয়োগ পেয়েছেন মো. আশরাফ হোসেন চৌধুরী । তিনি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক। মহানগর পিপি পদে মফিজুল হক ভূঁইয়া, জেলার দেওয়ানি আদালতের সরকারি কৌঁসুলি বা গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) পদে নিয়োগ পেয়েছেন কাশেম চৌধুরী। এ ছাড়া দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি পদে এস ইউ এম নুরুল ইসলাম, বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে আহমেদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী, সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে আবদুস সাত্তার সরোয়ার, মানব পাচার ট্রাইব্যুনালে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাইবার ট্রাইব্যুনালে সেলিম উদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রামের সাতটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পিপি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ১৩ জন। তাঁরা হলেন শফিউল মোর্শেদ চৌধুরী, হায়দার মো. সোলায়মান, রওশন আরা বেগম, আলমগীর মো. ইউনুচ, মাহমুদুল আলম চৌধুরী, সাইফুল আবেদীন, শামীম মো. খান, এরশাদুর রহমান, আ ন ম কামরুল হাসনাত চৌধুরী, ফৌজুল আমিন চৌধুরী, এরফানুর রহমান, আলী আকবর ও জেবুন নাহার।

দেওয়ানি আদালতে অতিরিক্ত জিপি ২০ জন, সহকারী জিপি ৪৫ জন, মহানগর দায়রা জজ আদালতে অতিরিক্ত পিপি ৪৭ জন ও সহকারী পিপি (এপিপি) ৬০ জন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অতিরিক্ত পিপি ৫৯ জন ও সহকারী পিপি ৮৯ জন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে পিপি পদে নিয়োগ পাওয়া আহমেদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, তিনি এ তালিকায় সন্তুষ্ট। তবে যোগ্য প্রার্থী যাঁরা বাদ গেছেন, তাঁদের নাম যুক্ত করে সম্পূরক তালিকা সরকার প্রকাশ করবে বলে আশাবাদী তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনে ভূমিকা পালন করা সাবেক মহানগর পিপি ও নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুস সাত্তারের নাম তালিকায় নেই। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলেনের নেতৃত্বে ছিলাম। আমি আন্দোলনে গুরুতর আহত হয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমিই বৈষম্যের শিকার হয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, আইন কর্মকর্তাদের তালিকায় এমন কয়েকজন আইনজীবীর নাম এসেছে, যাঁরা আন্দোলন–সংগ্রামে ছিলেন না।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গসংগঠন লইয়ার্স কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুল আলমের নামও তালিকায় নেই। তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেও আমি বৈষম্যের শিকার। আমার মতো অনেকেই বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।’