নিখোঁজ ‘সন্দেশের’ শোকে অসুস্থ ‘রসকদম্ব’, সন্ধানদাতার ইনাম ১০ হাজার টাকা

প্রিয় বিড়াল ‘সন্দেশের’ সঙ্গে তানিয়ার বড় বোন সুমাইয়া
ছবি: সংগৃহীত

গায়ের রং সাদা, লেজ বাদামি আর মাথায় সামান্য বাদামি রং আছে। নিখোঁজ বিড়ালটির নাম ‘সন্দেশ’। তার শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছে সঙ্গী বিড়াল ‘রসকদম্ব’। সন্ধান দিতে পারলে পুরস্কার হিসেবে মিলবে ১০ হাজার টাকা। নিজের পোষা প্রিয় বিড়ালের সন্ধান চেয়ে ছবিসহ এভাবে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে বিজ্ঞপ্তি সাঁটিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীর নাম তানিয়া খাতুন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে।

বিড়াল হারানোর বিজ্ঞপ্তি
ছবি: সংগৃহীত

বিড়াল হারানোর বিজ্ঞপ্তিতে লেখা আছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিমপাড়া (ছাত্রী হল) থেকে বিড়ালটি নিখোঁজ হয়েছে। বিড়ালটির নাম সন্দেশ। গায়ের রং সম্পূর্ণ সাদা, লেজ সম্পূর্ণ বাদামি এবং মাথা সামান্য বাদামি। বিড়াল হারানোর পর ওর সঙ্গীটি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। খাওয়া বন্ধ করে সারাক্ষণ কান্নাকাটি করছে। ক্যাম্পাস বা হলের আশপাশে যদি কোনো সহৃদয় ব্যক্তি বিড়ালটিকে দেখে থাকেন, অনুগ্রহ করে জানাবেন। যদি কেউ শখ করে পোষার জন্য নিয়ে থাকেন, দয়া করে আরেকটি প্রাণীর কষ্টটা অনুভব করে হলেও ওকে ফিরিয়ে দিন। বিড়ালটি একা একা খুব কষ্ট পাচ্ছে।’

নিখোঁজ বিড়াল ‘সন্দেশ’
ছবি: সংগৃহীত

জানতে চাইলে তানিয়া খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি মেসে থাকতে একটি বিড়ালের তিনটি ছানা হয়। সেখান থেকে একটি মারা যায়। বাকি ছানা দুটিকে লালনপালন করতেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে আসন পাওয়ার পর ছানা দুটিকে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। কিন্তু ৭ আগস্ট হঠাৎ ‘সন্দেশ’ হারিয়ে যায়। ১২ দিন হয়ে গেলেও বিড়ালটিকে খুঁজে পাননি। তিনি বলেন, ‘সন্দেশের’ সঙ্গীর নাম ‘রসকদম্ব’। তার অনুপস্থিতিতে ‘রসকদম্ব’ খুব একা হয়ে গেছে। কিছু দিন ধরে সে অসুস্থ। সারাক্ষণ কান্নাকাটি করছে। কিছু খেতে চাচ্ছে না। তাই অসুস্থ বিড়ালটিকে বাঁচাতে ‘সন্দেশ’কে প্রয়োজন।

বিড়ালের নামকরণের বিষয়ে তানিয়া বলেন, ‘একটি বিড়ালছানা হঠাৎ মিষ্টিতে মুখ দিয়েছিল। তখন হুট করেই তার নাম “সন্দেশ” রাখি। “সন্দেশ” নামে ডাকলে সে সাড়াও দিত। রস থেকে সন্দেশ, সেই থেকে অন্য ছানাটির নাম রাখি “রসকদম্ব”।’

আবেগাপ্লুত হয়ে তানিয়া আরও বলেন, বিড়ালগুলোর প্রিয় খাবার মুরগির কলিজা। এ ছাড়া মুরগির পা ও মাছ খায়। বাইরে বাঁচতে পারবে না ভেবে তিনি দুশ্চিন্তা করছেন। এখনো পর্যন্ত চার-পাঁচজন একটি বিড়াল দেখে কল করেছেন। কিন্তু সেটি তাঁর নয়। শুধু ১০ হাজার টাকা কেন, বিড়ালটির জন্য আরও বেশি টাকাও তিনি দিতে রাজি। তিনি শুধু বিড়ালটিকে চান।