পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের সোয়া ২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
বাগেরহাটের রামপালে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের সোয়া ২ কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার দুদকের বাগেরহাট সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) সমীরণ কুমার মণ্ডল বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
আসামিরা হলেন ব্যাংকের রামপাল উপজেলা শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক হামিমা সুলতানা ও মাঠ সহকারী খান রুহুল আমিন। তাঁর দুজনে সম্পর্কে স্বামী–স্ত্রী। এই দম্পতিকে ২০২২ সালে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। অভিযোগের বিষয়ে জানতে হামিমা সুলতানা ও খান রুহুল আমিনের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন হামিমা সুলতানা। তাঁর স্বামী খান রুহুল আমিন ছিলেন ওই অফিসের মাঠ সহকারী। এক দশকের বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালনকালে তাঁরা পরস্পর যোগসাজশে সদস্যবহির্ভূত ঋণ দেওয়া, ঋণ দেওয়ার সময় সদস্যদের সম্পূর্ণ টাকা না দেওয়া, ঋণ বা ঢেউটিন বিতরণের কথা বলে সদস্যবহির্ভূত ব্যক্তিদের কাছ থেকে পরিচয়পত্রসহ কাগজপত্র গ্রহণ করে ভুয়া ঋণ তৈরিসহ গ্রাহকের দেওয়া কিস্তি থেকে টাকা রেখে মোট ২ কোটি ৩৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮০২ আত্মসাৎ করেন।
এর মধ্যে ৬৮ লাখ ৬৪ হাজার ৪৪৫ টাকা এককভাবে আত্মসাৎ করেন হামিমা সুলতানা। এ ছাড়া খান নুরুল আমিন দায়িত্ব পালনকালে ঋণ বিতরণের সময় সদস্যকে স্বাক্ষর করিয়ে আংশিক অর্থ দিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করতেন। তিনি ব্যাংকের মোট ৩৯৪ জন সদস্যের ১ কোটি ৬৯ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৭ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
দুদকের বাগেরহাট সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের বরখাস্ত দুই কর্মকর্তার অর্থ আত্মসাতে অভিযোগ পেয়ে প্রায় এক বছর আগে দুদক অনুসন্ধানে নামে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে বিভিন্ন নথি পর্যালোচনায় পরস্পর যোগসাজশে অর্থ আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া যায়, যা টাকার অঙ্কে ২ কোটি ৩৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮০২।
আসামিরা আত্মসাৎ–সংশ্লিষ্ট সব রেকর্ডপত্র নষ্ট করার চেষ্টা করেন উল্লেখ করে দুদক কর্মকর্তা সাইদুর রহমান আরও বলেন, অর্থ আত্মসাৎসহ দুর্নীতির অভিযোগে দণ্ডবিধির কয়েকটি ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭–এর ৫(২) ধারায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।