টাঙ্গাইলের তিনটি আসনে লড়বেন বিএনপির বহিষ্কৃত ৩ নেতা
টাঙ্গাইলের তিনটি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির বহিষ্কৃত তিন নেতা। তাঁদের মধ্যে দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং একজন ‘কিংস পার্টি’খ্যাত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া দুজন হলেন টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদ্য বহিষ্কৃত সদস্য খন্দকার আহসান হাবিব ও টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আনোয়ারুল হক। আর টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনে বিএনএমের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন নাগরপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য খন্দকার ওয়াহিদ মুরাদ।
টাঙ্গাইল-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া খন্দকার আহসান হাবিব ‘স্বতন্ত্র গণতন্ত্র মঞ্চের’ ব্যানারে ১৫ নভেম্বর ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন। ওই দিনই বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি ১৯ নভেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে গত বুধবার জমা দেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী।
খন্দকার আহসান হাবিব প্রথম আলোকে বলেন, গণতন্ত্র রক্ষা করতে নির্বাচনের বিকল্প নেই। তাই তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পরিবর্তন হওয়া উচিত। অন্য কোনো কিছুর মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন হলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র লুণ্ঠিত হবে।’
টাঙ্গাইল-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মধুপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য খন্দকার আনোয়ারুল হক। তিনি ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। পরে ১৯৯৬ সালে বিএনপিতে যোগদান করেন। এরপর মধুপুরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন। তাঁকে বহিষ্কারের কথা নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির নেতারা।
খন্দকার আনোয়ারুল হক বলেন, ‘দলে আমি অবহেলিত। কোনো সভায় আমাকে ডাকা হয় না। আমার মনে হয়, আমাকে দলের আর প্রয়োজন নেই। তাই দল নির্বাচনে না এলেও আমি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তিনি দাবি করেন, উপজেলা বিএনপি থেকে তিনি পদত্যাগ করেননি। তাঁকে বহিষ্কারের কোনো চিঠিও পাননি।
টাঙ্গাইল-৬ আসনে নাগরপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য খন্দকার ওয়াহিদ মুরাদ ‘কিংস পার্টি’খ্যাত বিএনএমের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি ঢাকায় ব্যবসা করেন। তাঁকেও বহিষ্কারের কথা জানিয়েছে জেলা বিএনপি। সন্ধ্যায় মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অনেক দিন থেকেই বিএনপির রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন। তিনি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেননি বা তাঁকে বহিষ্কারের কোনো চিঠি পাননি। সম্প্রতি তিনি বিএনএমে যোগদান করেছেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। যাঁরা দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।