বাসের চাপায় মাকে হারিয়ে নির্বাক তিন বছরের ফাতেমা

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত শিশু ফাতেমা আক্তার। শনিবার দুপুরে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
ছবি: প্রথম আলো

মায়ের সঙ্গে ফুফাতো ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল ফাতেমা। বেড়ানো শেষে মায়ের সঙ্গেই ফিরছিল নিজেদের বাড়িতে। পথে বাসের চাপায় মাকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে নির্বাক তিন বছর বয়সী ফাতেমা আক্তার। দুর্ঘটনায় আহত ফাতেমা এখন রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বড় ব্রিজ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ফাতেমার মায়ের নাম নুজরু বেগম (৪০)। তিনি মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের দৌলতপুর এলাকার মজিবর হাওলাদারের স্ত্রী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দুপুর সাড়ে ১২টায় পশ্চিম রাজৈর এলাকা থেকে নুজরু মেয়ে ফাতেমাকে নিয়ে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। তাঁরা যানবাহনের জন্য রাজৈর বড় ব্রিজ এলাকায় আসেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বরিশালগামী সকুরা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নুজরু বেগমকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই নুজরুর মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার সময় নুজরুর মেয়ে ফাতেমাও বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয় লোকজন ফাতেমাকে উদ্ধার করে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রদীপ চন্দ্র মন্ডল বলেন, দুর্ঘটনায় আহত শিশুর বাঁ হাত ভেঙে গেছে। নাক ও মুখে আঘাত রয়েছে। তবে শিশুটি শঙ্কামুক্ত।

প্রত্যক্ষদর্শী সজিব হোসেন বলেন, ওই নারী রাস্তার পাশে দাঁড়ানো ছিল। তখন দ্রুতগতিতে আসা একটি বাস অন্য একটি গাড়িকে সাইড দিতে গিয়ে রাস্তার পাশে নেমে পড়ে। তখনই ওই নারীকে চাপা দিয়ে বাসটি টেনে চলে যায়।

এ সম্পর্কে রাজৈর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, সকুরা পরিবহন নামের বরিশালগামী একটি বাস এক নারী পথচারীকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার শিকার ওই নারীর শিশুকন্যাও গুরুতর আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বাসটি চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। বাসটি জব্দ করার জন্য হাইওয়ে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারাই বাস ও বাসের চালককে আটক করবে।