বরগুনায় আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ক্ষমা চেয়ে রক্ষা পেলেন শ্রমিকনেতা

বরগুনায় সহস্রাধিক নেতা-কর্মী নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাসভবনে যান শ্রমিকনেতা জহিরুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সহস্রাধিক নেতা-কর্মী নিয়ে বরগুনা-১ (বরগুনা সদর, আমতলী ও তালতলী) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সঙ্গে দেখা করেছেন জেলা থ্রি–হুইলার মালিক সমিতির সভাপতি জহিরুল ইসলাম ওরফে খোকন। পরে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম মিঞার কাছে তাৎক্ষণিক নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে রক্ষা পেয়েছেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরগুনা সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যায় আমতলী উপজেলা থেকে সাত-আটটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথের সঙ্গে তাঁর বাসভবনে দেখা করতে আসেন শ্রমিকনেতা ও বরগুনা জেলা থ্রি–হুইলার মালিক সমিতির সভাপতি জহিরুল ইসলাম। বাসগুলো বরগুনা পৌর শহরের ওপর দিয়ে ধীরেন্দ্র দেবনাথের বাসার দিকে যাওয়ার সময় যানজট সৃষ্টি হয়। পরে গাড়িগুলো বরগুনা সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে পার্কিং করে নেতা-কর্মীদের নিয়ে ধীরেন্দ্র দেবনাথের বাসভবনে যান জহিরুল ইসলাম। সেখানে অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্যও দেন নেতা-কর্মীরা। ধীরেন্দ্র দেবনাথের উপস্থিতিতে নৌকার সমর্থনে স্লোগান দেন তাঁরা। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথও বক্তব্য দেন।

এদিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গাড়ি পার্কিংয়ের বিষয়টি নজরে এলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) চন্দন কর গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে উপস্থিত হন বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম মিঞা। নির্বাচনী আচরণ বিধিমালার তিনটি ধারা লঙ্ঘন করেছেন বলে জহিরুল ইসলামকে মৌখিকভাবে জানান তিনি। পরে তাৎক্ষণিকভাবে শামীম মিঞার কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চান জহিরুল ইসলাম।

এ বিষয়ে জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওমরাহ হজ পালন করে দাদার (আওয়ামী লীগের প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ) সঙ্গে দেখা করতে আসছি। আমি শ্রমিকনেতা, আমার সংগঠনের শ্রমিকেরাও দাদার (ধীরেন্দ্র দেবনাথ) কাছে আসতে চাইলে পাঁচ থেকে ছয়টি বাসে এক হাজারের বেশি লোক নিয়ে আসছিলাম। আচরণ বিধিমালার বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না।’

ইউএনও শামীম মিঞা বলেন, আমতলী থেকে জহিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি সাত–আটটি বাসে অনেক লোক নিয়ে সংসদ সদস্যের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালার তিনটি ধারা লঙ্ঘন করেছেন। বিষয়টি জানানো হলে তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ায় তাঁকে প্রথমবারের মতো ক্ষমা করা হয়। তবে নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে প্রশাসন দায়িত্ব পালন করবে। এ ক্ষেত্রে যে প্রার্থী যতই শক্তিশালী হোক না কেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।