কুষ্টিয়ায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, আহত অন্তত ১০

কুষ্টিয়ায় বিএনপির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। আজ বিকেলে সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের কবুরহাট গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের কবুরহাট গ্রামের সরদারপাড়া এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।

বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সংঘর্ষের ঘটনায় তাঁদের ১০–১২ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। নিরাপদ স্থানে রেখে তাঁদের চিকিৎসা করানো হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ বিকেলে কবুরহাট এলাকায় স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা একটি কর্মসূচির আয়োজন করেন। বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা দুপুর থেকে সেখানে জড়ো হতে থাকেন। বিকেলে পুলিশ সেখানে যায়। পুলিশের উপস্থিতি দেখে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়।

পুলিশ দেখে বিএনপি নেতা-কর্মীরা অহেতুক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনের মধ্যে থেকেই যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার, সেটাই করেছে।
পলাশ কান্তি নাথ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কুষ্টিয়া

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। প্রায় ৩০ মিনিট চলা সংঘর্ষের এক পর্যায়ে পুলিশ কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে পুলিশের কঠোর পদক্ষেপে ঘটনাস্থল থেকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যান।

ঘটনাস্থলে থাকা জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, নিপীড়িত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য কেন্দ্র থেকে নেতাদের একটি দল কুষ্টিয়ায় আসেন। তাঁদের নিয়ে পুলিশের মৌখিক অনুমতিতে শহরের একটি মিলনায়তনে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ তুলে অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগে পুলিশ সমাবেশ বন্ধ করতে বলে। ছোট পরিসরে অন্য কোথাও করার জন্য বলা হয়। সেই মোতাবেক কবুরহাটে অবস্থিত যুবদল নেতা আবদুল মজিদের বাড়িতে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও পুলিশ গিয়ে নেতা-কর্মীদের মারধর শুরু করে। এ সময় নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে কয়েকটা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এরপরই পুলিশ নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে ১০–১২ জন আহত হয়েছেন।

তবে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ সোহেল রানা বলেন, পূর্বানুমতি ছাড়াই সমাবেশ করা হয়েছিল। এ ছাড়া সেখানে বিএনপির দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধে উত্তেজনাও ছিল। জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১০টি ফাঁকা গুলি চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।

সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ। তিনি বলেন, তাঁরা (বিএনপি নেতা-কর্মীরা) অনুমতি ছাড়াই কর্মসূচি আয়োজন করেছিলেন। কর্মসূচিস্থলে পুলিশ দেখে বিএনপি নেতা-কর্মীরা অহেতুক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনের মধ্যে থেকেই যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার, সেটাই করেছে। এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।