মিয়ানমারের গরু পাচার নিয়ে ডাকাত দলের সংঘর্ষ, গুলিতে বাবা-ছেলের মৃত্যু

কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নে মিয়ানমারের চোরাই গরু পাচারকে কেন্দ্র করে দুটি ডাকাত দলের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে বাবা ও ছেলে নিহত হন। গতকাল রোববার রাত পৌনে একটার দিকে ইউনিয়নের থোয়াইংগাকাটা ঘোনারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত দুজন হলেন থোয়াইংগাকাটা এলাকার বাসিন্দা জাফর আলম (৫২) ও তাঁর ছেলে মো. সেলিম (৩৩)। পাহাড়ঘেরা গ্রামটি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ও মিয়ানমার সীমান্তসংলগ্ন। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও রামু থানা-পুলিশ জানায়, গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে মিয়ানমারের চোরাই গরুর একটি বহর সীমান্ত পার করানোর জন্য শাহীন বাহিনীর ১৪-১৫ জন সদস্য উত্তর থোয়াইংগাকাটা মৌলভির ঘোনার একটি চায়ের দোকানের সামনে অবস্থান করছিলেন। খবর পেয়ে আবছার বাহিনীর ২০-২২ জন সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছে শাহীন বাহিনীর ওপর হামলা চালান। দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও গোলাগুলির মধ্যে পড়ে দোকানের বাইরে অবস্থানরত জাফর আলম ও মো. সেলিম গুলিবিদ্ধ হন।

গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে পাশের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ ও জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা যায়, কয়েক মাস ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তি মিয়ানমার থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে শত শত গরু রামুতে নিয়ে আসছেন। এসব চোরাই গরু চকরিয়া-আলী কদম হয়ে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় বিক্রি হয়। সীমান্ত অতিক্রম করার সময় প্রতিটি গরুর বিপরীতে দুই থেকে তিন হাজার টাকা করে ডাকাত দলকে পৌঁছে দিতে হয়। নাহয় গরু লুট করা হয়। সম্প্রতি চোরাই গরু পাচার ও সীমান্তে আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় রামুর আবছার ডাকাত ও শাহীন ডাকাত বাহিনীর মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, নিহত বাবা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারে এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। তবে আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। মামলার প্রস্তুতি চলছে।