কাজ করিয়ে মজুরি দেননি আড়তদার, চামড়া শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
মজুরি না পাওয়ায় চট্টগ্রাম-হাটহাজারী সড়কের এক পাশ অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন চামড়ার আড়তের প্রায় দেড় শ শ্রমিক। তাঁরা সবাই মেসার্স এআই লেদার নামের একটি আড়তে চার দিন ধরে কাজ করেছেন। শ্রমিকদের কেউ ৬ হাজার, কেউ ৮ হাজার টাকা করে পান বলে জানান।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় আতুরার হাটহাজারী সড়কের আতুরার ডিপো এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকেরা আড়তের সামনে ড্রাম, চেয়ার ফেলে এক পাশ আটকে রেখেছেন। তাঁরা মজুরির টাকা পরিশোধের দাবিতে নানা স্লোগান দেন। তবে পুলিশের আশ্বাসের পর দুপুর ১২টায় সড়ক থেকে উঠে যান শ্রমিকেরা। এরপর যান চলাচল শুরু হয়।
মোহাম্মদ রাজু নামের এক শ্রমিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেউ তিন দিন, কেউ চার দিন ধরে আড়তে কাজ করছেন। রাতদিন এক করে কাজ করতে হয়েছে। ঈদের আনন্দ করারও সময় পাই নাই। মজুরি দেওয়ার কথা ছিল গতকাল রোববার রাতে। টাকা না দিয়ে ঘোরাচ্ছেন আড়তদার। এ কারণে রাস্তায় নেমেছি।’
আরেক শ্রমিক ফজলে রাব্বি বলেন, ‘গতকাল রাতে টাকা দিতে পারেননি। আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত সময় নিয়েছিলেন। সেই কথাও রাখতে পারেননি আড়তদার। টাকা না দিলে কেন কাজে ডেকেছেন, সে জবাব দিতে হবে।’
নোয়াখালীর বাসিন্দা আবদুল কাদের ঢাকায় একটি চামড়ার আড়তে কাজ করেন। অন্য এক ব্যক্তির মাধ্যমে ঈদের চার দিন এআই লেদারে কাজ করার প্রস্তাব পান। চার দিনে ৮ হাজার টাকা পাওয়ার কথা তাঁর। টাকা না পেয়ে তিনি ক্ষুব্ধ। কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদে বাড়িতে না গিয়ে চট্টগ্রামে এসেছিলাম কয়েক হাজার টাকা আয়ের জন্য। এখন টাকা পাব কি পাব না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।’
মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম নামের আরেক শ্রমিক জানান, ঈদ উপলক্ষে প্রায় দেড় শ জন শ্রমিক কাজ করেছেন। চামড়ায় লবণ দেওয়া, পরিষ্কার করা, গাড়ি থেকে নামানোসহ সব কাজই করতে হয়েছে। ঘুমানোর সময়ও পাননি। অথচ মজুরি দেওয়ার বেলায় গাফিলতি করছেন আড়তদার। টাকা না দিলে কেন কাজে ডেকেছেন। এ জবাব দিতে হবে।
শ্রমিকের মজুরি না দেওয়ার বিষয়ে আড়তদার মোহাম্মদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘একজন ঠিকাদারের মাধ্যমে শ্রমিকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। গতকাল শ্রমিকেরা ঠিকমতো কাজ করেননি। এ কারণে চামড়া জমে গিয়েছিল। চামড়া বাঁচাতে আমার কাজ করতে হয়েছে। হিসাব–নিকাশ করতে পারিনি। এখন ঠিকাদার আমাকে শ্রমিকের একটা হিসাব দেবে। সে হিসাব অনুযায়ী মজুরি পরিশোধ করব।’
মোহাম্মদ আলী আরও বলেন, ‘গতকাল আমরা খুব সমস্যায় ছিলাম। আমি কথা বলতে পারছি না। আমার ব্রেনও কাজ করছে না। এ কারণে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য আমি রাতে বাসায় চলে যাই।’