ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করায় স্ত্রীকে অ্যাসিড নিক্ষেপ, তিনজনের কারাদণ্ড
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করায় স্ত্রীসহ শিশুসন্তানকে অ্যাসিড নিক্ষেপের অপরাধে তিনজনকে আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এ রায় দেন।
দণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নের ভলাকুট গ্রামের নক্কু খান (৫৬), উজ্জল খান (৩৩) ও সোহাগ খান (৩৩)। এর মধ্যে সোহাগ ও উজ্জল পলাতক। রায় ঘোষণার সময় নক্কু খান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সবাই গৃহবধূ সুমার স্বামীর বাড়ির লোকজন। সুমা নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট গ্রামের ছোয়াব মিয়ার মেয়ে ও একই গ্রামের জহির খানের স্ত্রী।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট গ্রামের জহির খান প্রায়ই স্ত্রী সুমা বেগমকে নির্যাতন করতেন। এ ঘটনায় তিনি আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। নাসিরনগর থানা-পুলিশ সুমার স্বামী জহির খানকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠান। স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় স্বামী জহির খান কারাগারে থাকতে সময় তার গোষ্ঠীর লোকজন সুমা ও তাঁর দুই ছেলেকে প্রাণে হত্যার হুমকি দেন। এ ঘটনায় সুমা স্বামীর গোষ্ঠীর লোকজনের বিরুদ্ধে নাসিরনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এতে জহির খানের গোষ্ঠীর লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ২০১৭ সালের ১০ মে সন্ধ্যায় ঘরে ঢুকে সুমা বেগম ও তাঁর ১২ বছর বয়সী সন্তানের ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন। অ্যাসিডে সুমার দুই হাত ও পিঠের চামড়া পুড়ে যায়।
এ ঘটনার পরদিন সুমা বেগম বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে নাসিরনগর থানায় মামলা করেন। মামলার নক্কু, উজ্জ্বল, সোহাগ ছাড়াও ভলাকুটের ইসমাইল খান, মুনায়েম খান, ইসরাইল খান, বিল্লাল খান ও হাফিজা বেগমকে আসামি করা হয়।
মামলার বাদী সুমা বেগম বলেন, অ্যাসিড নিক্ষেপের মতো ঘৃণ্য কাজের ঘটনায় আদালত আসামিদের যে দণ্ড দিয়েছেন, তাতে তাঁরা সন্তুষ্ট। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন বিচার প্রক্রিয়ার পর আদালত তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করে যে রায় দিয়েছেন, তাতে বাদীপক্ষ ন্যায়বিচার পেয়েছে।