অপরিকল্পিত পুকুর খনন, জলাবদ্ধতায় বাজিতপুর বিলের ১০০ একর জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে না
জলাবদ্ধতার কারণে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বাজিতপুর বিলে ১০০ একর জমিতে শীতকালীন ফসল চাষাবাদ করতে পারছেন না কৃষকেরা। বিলের মধ্যে অপরিকল্পিত পুকুর খনন ও নদী ভরাটের কারণে বিলের পানি নামতে না পারায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
কৃষকেরা জানান, আগে বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই (ডিসেম্বর-জানুয়ারি) তাঁরা বিলে শর্ষে, গম, বিনা চাষের রসুনসহ নানা ধরনের শীতকালীন ফসল আবাদ করতেন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বিলের মধ্যে অপরিকল্পিতভাবে শত শত পুকুর কাটা হয়েছে। এ ছাড়া বিলের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী ভরাট হওয়ায় পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারণে বিলের পানি নামতে না পেরে বিলে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
বাজিতপুর গ্রামের কৃষক আবদুস সোবাহান বলেন, ‘আমার ২০ বিঘা বোরো ধানের জমি আছে। জলাবদ্ধতার কারণে এখনো জমি পানির নিচে। এবার জমিতে বোরো ধানসহ শর্ষে, গম ও রসুনের আবাদ করতে পারিনি। অথচ ওই জমির ফসলেই আমার সংসার চলে। কিছু লোভী লোকজন বিলে পুকুর কাটায় জমির পানি নামছে না। তাঁদের বিরুদ্ধে কে ব্যবস্থা নেবে? আর আমাকেই–বা কে ক্ষতিপূরণ দেবে?’
একই গ্রামের কলেজশিক্ষক খাদেমুল ইসলাম বলেন, বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনে তিনি নিজে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু কেউই প্রতিকার করেননি। এ জন্য তাঁরা আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহাদি হাসান বলেন, বড়াইগ্রাম উপজেলার অধিকাংশ জমি তিন ফসলের। কিন্তু অপরিকল্পিত পুকুর খননের ফলে এখন অনেক জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে একটার বেশি ফসল করা যাচ্ছে না। বিলের অন্তত ৩০০ বিঘা জমি জলাবদ্ধ। পানি না নামলে সেখানে নতুন ফসল আবাদ করা যাবে না। পানির নামার পর কী ফসল করলে কৃষকের ক্ষতি কমানো যাবে, সে ব্যাপারে তাঁরা পরামর্শ দেবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসনের চেষ্টা করা হবে।