সকাল সাড়ে আটটার পর থেকে পরানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটারদের সারিতে দাঁড়িয়ে আছেন আছিয়া খাতুন (৫৬)। তিনি বলেন, ‘আগে ব্যালটে ভোট দিতাম তাতেই আরাম ছিল। সিল মাইরা চইল্যা আসতে পারতাম। এখন এই মেশিনের কারণে ভোট দিতে দেরি হইতেছে। সকালে না খাইয়া আইছি। ভাবছি ভোট দিয়া যাইয়া খাবো। লাইনেই দাঁড়ায়া আছি অনেক সময় ধইরা। এখনো লাইন পাইতে আধা ঘণ্টা লাগবে।’

আরেক ভোটার আম্বিয়া খাতুন (৫৮) বলেন, ‘লাইনে দাঁড়ায় থাইকা গরমে সিদ্ধ হইয়া গেছি। মেশিনে ভোট দেওয়া ঝামেলা বইলাই দেরি হইতেছে।’

এদিকে ওই কেন্দ্রের ১০ নম্বর কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, পোলিং কর্মকর্তা মার্শাল টিটু ভোটারদের বোঝানোর কথা বলে গোপন বুথে ঢুকে নিজেই ইভিএমের বোতাম চেপে দিয়ে দিচ্ছেন। এ কাজে তিনি করতে পারেন কি না, তা জানতে চাইলে মার্শাল টিটু আমতা আমতা করে বলেন, এটা ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে ওই ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম আহমেদ বলেন, ভোটার ছাড়া গোপন বুথে কেউ ঢুকতে পারবেন না। অভিযোগের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

এদিকে সকাল ৯টার দিকে কানাইপুর ইউনিয়নের কানাইপুর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের ২ নম্বর বুথে হঠাৎ ইভিএম বিকল হয়ে যায়। এতে প্রায় ১৫ মিনিট ওই কক্ষে ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল।

ওই কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘বেশির ভাগ ভোটার ইভিএমে ভোট দিতে অভ্যস্ত নন। ভোট শুরুর আধা ঘণ্টার মধ্যে মাত্র তিনজন ভোট দিতে পেরেছেন। ভোটারদের কারণে আমাদেরও বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হচ্ছে।’

ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নূরুল আমীন বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি অনেক ভালো আছে। গ্রামের মানুষ সবাই সকাল সকাল ভোট দিতে চলে এসেছেন বলে কেন্দ্রে চাপ বেড়েছে। এ ছাড়া অনেকে ইভিএমে অভ্যস্ত না থাকায় কিছুটা দেরি হতে পারে। তবে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলছে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখার জন্য পুলিশ নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে।

প্রসঙ্গত, ফরিদপুর সদর উপজেলার ১১ ইউনিয়নের ১০৩টি কেন্দ্রের ৬৬৫টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। সকাল সাড়ে আটটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬৯ জন প্রার্থী, সাধারণ সদস্য পদে ৩৫৮ জন এবং সংরক্ষিত সদস্য পদে ১১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৩৩ হাজার ২৯।