ঈদ শেষে চাপ বেড়েছে কর্মস্থলগামী মানুষের, দাবদাহে ভোগান্তি

ঈদ শেষে কর্মস্থলগামী মানুষের চাপ বেড়েছে। আজ সোমবার দুপুরে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া বাসটার্মিনাল এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

বৈশাখের দুপুরে কাঠফাটা রোদে হাঁসফাঁস অবস্থা। লঞ্চ থেকে নেমে মিলন ইসলাম (৪০) মাথায় ব্যাগভর্তি মালামাল ও এক হাতে শিশুসন্তান নিয়ে বাসের উদ্দেশে হাঁটতে শুরু করেন। তাঁর পেছনে ব্যাগ নিয়ে ছুটছেন স্ত্রী। প্রায় আধা কিলোমিটার পথ হাঁটার পর প্রচণ্ড গরমে নাস্তানাবুদ এই দম্পতি গাছের ছায়ায় দাঁড়ান। সেখানে আরও কয়েকজন ক্লান্ত যাত্রী বিশ্রাম নিচ্ছিলেন।

প্রচণ্ড গরমে স্বস্তি পেতে যাত্রীদের কেউ কেউ ঠান্ডা পানি দিয়ে হাত-মুখ ভিজিয়ে নিচ্ছিলেন। এ দৃশ্য আজ সোমবার দুপুরে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া লঞ্চঘাট এলাকার।
মিলন ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন তিনি। ঈদের দুই দিন আগে তাঁরা গ্রামের বাড়িতে যান। ঈদ উদ্‌যাপন শেষে সোমবার সকালে বাড়ি থেকে বের হন। বেলা একটার দিকে দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে লঞ্চে করে অন্যান্য যাত্রীর সঙ্গে পাটুরিয়ায় লঞ্চঘাটে ঘাটে আসেন। এরপর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যেতে প্রচণ্ড গরমে অন্যান্য যাত্রীর মতো তাঁদেরও হাঁটতে হয়। তিন চাকার যানে করেও যাত্রীদের কেউ কেউ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যান। এতে প্রচণ্ড গরমে ভোগান্তিতে পড়েন তাঁরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন শেষে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে ফেরি ও লঞ্চে করে পদ্মা নদী পার হয়ে যাত্রীরা পাটুরিয়া ঘাটে আসেন। এরপর প্রচণ্ড গরমে তাঁদের প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে বাসে উঠতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন ঢাকামুখী যাত্রীরা। প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা যাত্রীদের অনেকে ঘাট এলাকায় লেবুর শরবত, ঠান্ডা পানীয় পান করতে দেখা যায়। কাউকে কাউকে প্রচণ্ড গরমে হাত-মুখ ও মাথা পানি দিয়ে ধুতে দেখা যায়।

ঘাট এলাকায় দায়িত্বে থাকা জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আবদুস সালাম বলেন, ঈদ উদ্‌যাপন শেষে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লোকজন কর্মস্থলের দিকে ছুটছেন। তবে যাত্রীর চাপ অনেকটা স্বাভাবিকই রয়েছে। তবে প্রচণ্ড গরম সহ্য করে যাত্রীরা গন্তব্যের দিকে ছুটছেন। আগামী শনি ও রোববার থেকে পোশাক কারখানা খোলা। এ জন্য আগামী শুক্র ও শনিবার পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় যাত্রীদের চাপ বাড়তে পারে।

ঘাটসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ২২টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। কোনো কোনো লঞ্চে ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী বহন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ১৫টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। ঈদের ছুটির শেষে সোমবার যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। তবে পর্যাপ্তসংখ্যক ফেরি থাকায় যাত্রীদের পারাপারে কোনো সমস্যা নেই।