পটুয়াখালীতে বিএনপি-যুবলীগ সংঘর্ষ, আহত শতাধিক

আজ সকাল ১০টার দিকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষের কারণে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে সিঙ্গারা পয়েন্ট পর্যন্ত পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়ছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালীতে জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে জেলা যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে বনানী মোড়ে দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় ভাঙচুর করা হয়েছে জেলা বিএনপির কার্যালয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।

এদিকে বিএনপির দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ পটুয়াখালীতে জনসমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও সংঘর্ষের কারণে তা পণ্ড হয়ে গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১০ দফা দাবিতে আজ সকালে জেলা বিএনপির উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ কর্মসূচি ছিল। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। সমাবেশ সফল করতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা সকাল থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন।

অন্যদিকে আজ সকালে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা শহরে ‘শান্তি সমাবেশের’ মিছিল করেন। মিছিল নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এসব সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিএনপির সমাবেশস্থলের দিকে এগোলে পথে দুই পক্ষ মুখোমুখি হয়। এ সময় উভয় পক্ষই লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সকাল ১০টার দিকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষের কারণে বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে সিঙ্গারা পয়েন্ট পর্যন্ত পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় একটি মোটরসাইকেলে। দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশ তিনটি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষের সময় একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়
ছবি: প্রথম আলো

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বাহাউদ্দিন বাহার অভিযোগ করে বলেন, সমাবেশের প্রধান অতিথি আবদুল আউয়াল মিন্টু যাতে সভাস্থলে পৌঁছাতে না পারেন, সে জন্য তাঁর হোটেলের সামনে মহড়া দিয়ে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। শুক্রবার রাত থেকেই যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে ভীতি সৃষ্টি করেছেন। এ সংঘর্ষে তাঁদের শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা যুবলীগের শান্তি সমাবেশের মিছিলে বিএনপির মিছিল থেকে উসকানিমূলক স্লোগান দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ করেছি। বিএনপির সন্ত্রাসীদের হামলায় আমাদেরও অন্তত ৫০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের শান্তি সমাবেশ থেকে ঘোষণা করছি, পটুয়াখালীতে আগুন–সন্ত্রাসী ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের আমরা মাঠে থেকে প্রতিহত করব।’

আজ সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে বনানী মোড়ে দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন
ছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সাজেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল থেকে এখানে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। সকাল ৯টায় সমাবেশ শুরু হয়। আইনশৃঙ্খলার অবনতি যাতে না ঘটে, পুলিশ সে জন্য প্রস্তুত ছিল। পরে সেখানে পরিস্থিতির অবনতি হলে পুলিশ তিনটি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।