স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মমিনুল ইসলাম (৬০) নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোতাহারাত আখতার ভূঁইয়া এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মমিনুল ইসলাম সিরাজদিখান উপজেলার পশ্চিম পাউসার গ্রামের বাসিন্দা। মুন্সিগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. জামাল উদ্দিন জানান, রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার বাদী ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল রাতে মমিনুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী শাহানাজ পারভীন ওরফে শাহিনের (৫৫) ঝগড়া হয়। এর জের ধরে ওই দিন রাত ২টার দিকে শাহানাজ পারভীনকে ঘুমন্ত অবস্থায় শাবল দিয়ে মাথায় একাধিক আঘাত করে ঘরে তালাবদ্ধ রেখে মমিনুল ইসলাম পালিয়ে যান। পরদিন সকালে মেয়ে আলপনা আক্তার মাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহানাজ পারভীনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত শাহানাজ পারভীনের ভাই সুলতান ব্যাপারী বাদী হয়ে ২৯ এপ্রিল সিরাজদিখান থানায় হত্যা মামলা করেন। আসামি মমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অজয় চক্রবর্তী বলেন, মমিনুল হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। পর্যায়ক্রমে ১৬ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত মমিনুল ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন।
মামলার বাদী সুলতান ব্যাপারী বলেন, ‘আসামি আমার বোনকে হত্যা করেছে। আদালত আজ হত্যা মামলার রায় দিয়েছেন। আমি রায়ে সন্তুষ্ট।’ সুলতান ব্যাপারী আরও বলেন, ‘এই আসামি এর আগে আরও দুইটা বিয়ে করেছেন। তাঁর আগের দুই স্ত্রীকেও খুন করেছেন। তবে ওই সমস্ত ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।’
বাদীর মেয়ে আলপনা আক্তার বলেন, ‘এ মামলায় পাঁচ মাস জামিনে ছিলেন আমার বাবা। জামিনে বেরিয়ে আমাদের অনেক নির্যাতন করেছেন। আমরা তাঁর বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেছিলাম। মাকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় আমিও আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছি।’