প্রকাশ্যে মুজিব কোট পুড়িয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন আওয়ামী লীগ নেতা
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় প্রকাশ্যে নিজের মুজিব কোট পুড়িয়ে দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের এক নেতা। আজ রোববার দুপুরে উপজেলার চৌমুহনী বাজারে তিনি এ ঘটনা ঘটান।
ওই নেতার মুজিব কোট পোড়ানো ও পদত্যাগের ঘোষণার একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
মুজিব কোট পোড়ানো ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম রেজাউল করিম। তিনি উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) আট নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। ক্ষেতলাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুজ্জামান তালুকদার ওই ব্যক্তির পদপদবির বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
রেজাউল করিমের মুজিব কোট পোড়ানোর একটি ভিডিও চিত্র প্রথম আলোর কাছে এসেছে। ২ মিনিট ২৮ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম একটি মুজিব কোট হাতে ধরে আছেন। একজনকে ডেকে নিয়ে তাঁকে মুজিব কোটে আগুন ধরিয়ে দিতে বলছেন। ওই ব্যক্তি মুজিব কোটে গ্যাসলাইট দিয়ে আগুন দেন। রেজাউলের হাতে মুজিব কোট পুড়তে থাকে। একপর্যায়ে রেজাউল হাত থেকে আগুন লাগানো মুজিব কোট সড়কের ওপর রেখে দেন। আগুনে পুড়তে থাকা মুজিব কোট দেখাচ্ছিলেন আর বলছিলেন, ‘এই দলকে আমার আর ভালো লাগে না। এদের চালচলন (কর্মকাণ্ড) আর ভালো লাগে না। তাই মুজিব কোট পুড়িয়ে আমি এই দল থেকে পদত্যাগ করলাম।’
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ রোববার দুপুরে মামুদপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী বাজারে আসেন রেজাউল করিম। তিনি বাজারের মসজিদে জোহরের নামাজ আদায়ের পর মুজিব কোট হাতে নিয়ে সড়কের ওপর আসেন। তিনি একজনকে মুজিব কোটে আগুন দিতে বলেন। এরপর ওই ব্যক্তি মুজিব কোটে আগুন ধরিয়ে দেন। তখন রেজাউল করিম দল থেকে পদত্যাগ ও মুজিব কোট আগুনে পোড়ানোর ব্যাখ্যা করেন।
যোগাযোগ করলে মুঠোফোনে রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মুজিব কোট পুড়িয়ে দল থেকে পদত্যাগ করেছি। আমার আর আওয়ামী লীগ করতে ভালো লাগে না।’
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুজ্জামান তালুকদার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, রেজাউল করিম মামুদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আছেন। তিনি আজ দুপুরে চৌমুহনী বাজারে তাঁর মুজিব কোট পুড়িয়ে দিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন বলে জেনেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘রেজাউল আওয়ামী লীগের হাইব্রিড নেতা। তিনি জয়পুরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের সৃষ্টি। তাঁদের মতো নেতার কারণে আজ আওয়ামী লীগের এই করুণ পরিণতি। আগামী দিনে জয়পুরহাটে এমন আরও অনেক হাইব্রিড নেতাকে এভাবে দলত্যাগ করতে দেখা যাবে।’