নারায়ণগঞ্জে চার ঘণ্টা বন্ধ গণপরিবহন, তাতেও স্বস্তি নগরবাসীর

প্রশাসনের অভিযানের ঘোষণায় সড়কে গণপরিবহন চলাচল ছিল কম। রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া মোড় এলাকায় তোলা
ছবি: দিনার মাহমুদ

গত শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের যানজট ও ফুটপাতের হকার সমস্যা সমাধানে গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব। বৈঠকে জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা সিদ্ধান্ত নেন, রুট পারমিটবিহীন কোনো গাড়ি চলতে পারবে না। অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও ফুটপাত হকারমুক্ত করতে ঐকমত্যে পৌঁছান তাঁরা।

ওই বৈঠকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক ও ভারপ্রাপ্ত জেলা পুলিশ সুপার আমীর খসরু মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সকালে নগরের চাষাঢ়া পুলিশ বক্সের সামনে রেকার এনে রাখা হয়েছে। সকালে নগরের চাষাঢ়া আর্মি মার্কেটের সামনে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটে চলাচলকারী গণপরিবহন উৎসব ও বন্ধন পরিবহনের কাউন্টারগুলো বন্ধ ছিল। সকাল থেকে ঢাকার উদ্দেশে নারায়ণগঞ্জ থেকে কোনো গণপরিবহন চলাচল করেনি। গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের ট্রেনে ও বিকল্প উপায়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

প্রশাসনের ঘোষণার কারণে সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন উৎসব পরিবহনের কাউন্টারম্যান সৈয়দ হোসেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত গাড়ি চালানো হয়নি। অন্য দিন পাঁচ মিনিট পরপর গাড়ি ছাড়লেও দুপুরের পর থেকে ১০ মিনিট পরপর গাড়ি ছাড়া হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী উৎসব, বন্ধন, বিআরটিসি বাস ছাড়াও হিমাচল ও আনন্দ পরিবহন ও শীতাতপনিয়ন্ত্রিত এসি বাস শীতল পরিবহন চলাচল করে। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ থেকে শিমরাইল রুটে বন্ধু পরিবহন, নারায়ণগঞ্জ থেকে সোনারগাঁ রুটে বাঁধন পরিবহনের বাস চলাচল করে।

ঢাকাগামী যাত্রী রিপন আহমেদ বলেন, ‘গত ৫০ বছরে শহরে আমাদের রাস্তাঘাট বাড়েনি। এই শহরের বাইরের কোনো পরিবহন চলতে দেওয়া উচিত নয়। অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে নগরের যানজট কমে আসবে।’

এদিকে সকাল থেকে বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাত ফাঁকা ছিল। ফুটপাতে কোনো হকারকে পণ্য নিয়ে বসতে দেখা যায়নি। তবে জেলা শিল্পকলা একাডেমির একটি অনুষ্ঠানে শামীম ওসমান গেলে সেখানে হকাররা তাঁকে ঘিরে ধরেন। হকারদের উদ্দেশে শামীম ওসমান বলেন, ‘হকার যদি উঠায়, তাহলে সবাইরে উঠাইয়া দেব। না উঠাইলে সবাই থাকব। সবাইরে ওঠানোর পর আমার এলাকায় যাঁরা কাজ করেছেন, আমি তাঁদের দেখব।’

নগরের বিভিন্ন পয়েন্টের অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আমীর খসরু মাহমুদ। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, চাষাঢ়া থেকে বাস কাউন্টার চানমারীতে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাস মালিক সমিতির নেতারা মেনে নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু সড়ক থেকে হকার তুলে দেওয়া হয়েছে। বাকি সড়কগুলো থেকে হকার পর্যায়ক্রমে তুলে দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শুরু করা হয়নি। পরিবহনমালিকেরা ভয়ে গাড়ি বের করেননি। সোমবার বিকেলে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে। বৈঠকের পর থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হবে।