কেরোসিন ঢেলে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ

হত্যাপ্রতীকী ছবি।

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর গায়ে কেরোসিন ঢেলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পুড়িয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ওই নারী। এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে স্বামী ও শাশুড়িকে আসামি করে আজ রোববার সকালে একটি হত্যা মামলা করেন।

গৃহবধূর শাশুড়িকে সকালে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

গত বুধবার সকালে উপজেলার বকচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম খাদিজা আক্তার (২২)। তাঁর বাবার বাড়িও বকচর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম খোকন তালুকদার।

স্থানীয় লোকজন বলেন, খাদিজার স্বামী ইব্রাহিম প্রধানীয়া আগে বিদেশে থাকতেন। সম্প্রতি তিনি দেশে ফেরেন। ইব্রাহিম ও খাদিজা দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে। খাদিজা চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী ও শাশুড়ি খাদিজাকে নানাভাবে নির্যাতন করতেন। গত মঙ্গলবারও পারিবারিক কলহের জেরে খাদিজাকে মারধর করেন ইব্রাহিম। পরদিন বুধবার ঝগড়ার এক পর্যায়ে খাদিজার গায়ে তাঁর স্বামী ও শাশুড়ি কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় তাঁর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে গায়ের আগুন নেভান এবং খাদিজার মা–বাবাকে মুঠোফোনে খবর দেন। এ সময় তাঁর স্বামী বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

দগ্ধ অবস্থায় খাদিজাকে স্বজনেরা প্রথমে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই দিন তাঁকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন স্বজনেরা। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান ওই গৃহবধূ।

গৃহবধূর বাবা খোকন তালুকদার অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকেই তাঁর মেয়েকে নানাভাবে নির্যাতন করতেন স্বামী ও শাশুড়ি। শেষ পর্যন্ত গায়ে আগুন লাগিয়ে মেয়েকে মেরেই ফেলা হলো। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

গৃহবধূর স্বামী ইব্রাহিম প্রধানীয়ার মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে মতলব দক্ষিণ থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। মামলার এক আসামি জাহেদা খাতুনকে আজ সকালে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার অপর আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।