কেমন আছেন রাসেল ভাইপারের ছোবলের পর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সেই কৃষক

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন কৃষক জাহিদ প্রামাণিক। পাশে রয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো


মা, বাবা, স্ত্রী, সন্তান ও বড় ভাই পাশে। কেউ বিছানার পাশে দাঁড়িয়ে, আবার কেউ বিছানায় বসে। পরিবারের সদস্যরা ঘিরে আছেন কৃষক জাহিদ প্রামাণিকের বিছানার চারপাশ। তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন তিনি। মৃদু হাসছেন। দেখে বোঝা যাচ্ছে, আগের চেয়ে শারীরিকভাবে ভালো আছেন। চিকিৎসকও জানান, জাহিদ গতকালের (সোমবার) তুলনায় বেশ ভালো আছেন।

পাটখেতে নিড়ানি দেওয়ার সময় জাহিদ প্রামাণিককে গতকাল সকালে ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে ছোবল দেয় বিষধর রাসেল ভাইপার। সাপটিকে মেরে ফেলেন তিনি। এরপর চলে যান স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাপটিকে বিষধর রাসেল ভাইপার বলে শনাক্ত করেন। সেখান থেকে জাহিদকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

জাহিদের বাড়ি রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর চরপাড়া গ্রামে। আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জাহিদ মেডিসিন (পুরুষ) ওয়ার্ডের ৬ নম্বর বিছানায় আছেন। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

আরও পড়ুন

হাসপাতালের মেডিসিন চিকিৎসক মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সাপ শনাক্তের পর জাহিদকে সেই মোতাবেক ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। তাঁকে (জাহিদ) ধন্যবাদ দিতে হয় এ জন্য যে তিনি সাপটিকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। তাঁকে অন্য ওষুধও দেওয়া হয়েছে। গতকালের তুলনায় তিনি বেশ ভালো আছেন। তাঁকে আরও কিছুদিন রেখে সেবা করা হবে।

মাহফুজুর রহমান আরও জানান, ঢাকার এক জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক মৃত সাপটিকে সংরক্ষণ করতে বলেছেন। তাই সেটিকে বড় কৌটার ভেতর ফরমালিন দিয়ে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে ঢাকায় সেই চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হবে। ওই চিকিৎসক সাপে কাটা রোগী ও সাপ নিয়ে কাজ করেন।

দুপুরে কথা হয় কৃষক জাহিদ প্রামাণিকের সঙ্গে। এ সময় পাশে ছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। সাপে কাটার পর জাহিদ একাই বাড়ি থেকে দুটি হাসপাতালে গিয়েছেন। নিজেই নিজের চিকিৎসার জন্য দীর্ঘ পথ ছুটেছেন। জাহিদ জানান, প্রথম দিকে একটু ভয় পেয়েছিলেন। পাংশা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটার ওষুধ ছিল না। তাঁকে কুষ্টিয়ায় পাঠানো হয়। এখানে চিকিৎসা শুরু হওয়ার পর বেশ ভালো আছেন। আঙুল একটু ফোলা আছে। তবে শারীরিকভাবে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

জাহিদের বড় ভাই কামাল প্রামাণিক বলেন, গতকাল সকালে হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলে জাহিদ বের হন। এরপর তাঁর ভাইয়ের কোনো খোঁজ পাচ্ছিলেন না। বিকেলে জানতে পারেন, জাহিদ কুষ্টিয়ায় হাসপাতালে ভর্তি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি চলে আসেন। রাতে ভাইয়ের কাছেই ছিলেন। আজ সকালে পরিবারের অন্য সদস্যরা আসেন।

আরও পড়ুন