বিএনপি ছেড়ে বিএনএমে যোগ দিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আবু জাফর

শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি ছেড়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে (বিএনএম) যোগ দিয়েছেন শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর। দল ত্যাগের আগপর্যন্ত তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আবু জাফর ফরিদপুর-১ সংসদীয় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন।

রাত সাড়ে আটটার দিকে শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ কারণে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে (বিএনএম) যোগ দিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, গত চার-পাঁচ দিনের মধ্যে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হামলা–মামলার শিকার হয়ে বিএনপির ৪০০-৫০০ লোক পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অনেকে কারারুদ্ধ হয়েছেন। নেতা-কর্মীদের বাঁচাতে এ মুহূর্তে এর কোনো বিকল্প ছিল না।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোমবার বিকেলে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে শাহ মোহাম্মদ আবু জাফরকে বিএনএমের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে দলটির নতুন মহাসচিব মো. শাজাহান বলেন, যে সাবেক সংসদ সদস্যরা বিএনএমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, তাঁরা নিজ নিজ সংসদীয় আসনে নির্বাচন করবেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। তিনি প্রথমে বাকশালে যোগ দেন। পরে ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে; ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় পার্টি ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০৫ সালে ফরিদপুর-১ আসনে উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

বিএনপি ছেড়ে আবু জাফরের বিএনএমে যোগ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জুলফিকার হোসেন বলেন, এ রকম দু-চারটা লোভী নেতা দল ত্যাগ করলে তাতে বিএনপির কোনো ক্ষতি হবে না। এ দল ত্যাগের মধ্য দিয়ে শাহ জাফর একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে কিবরিয়া বলেন, শাহ জাফর দল ত্যাগ করেছেন। শাহ জাফরের মতো এ রকম ছয় ডজন নেতা চলে গেলেও তাতে বিএনপির ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। বিএনপির কারণেই তিনি আজ বড় নেতা। সেদিন বেশি দূরে নয়, বিএনপি ত্যাগের পরিণাম তিনি হাড়ে হাড়ে টের পাবেন। আন্দোলনের এই সময়ে দলের পিঠে ছুরি মেরে দলের সঙ্গে বেইমানি করে যাঁরা চলে যাবেন, তাঁদের পরিণাম শুভ হবে না। শাহ জাফরের প্রতি ধিক্কার জানানোর ভাষা তাঁর জানা নেই। তাঁর প্রতি শুধু করুণা করতে পারেন।