পঞ্চগড়ে ‘আত্মহত্যার’ প্ররোচনায় মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানকে জড়ানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলেন

পঞ্চগড়ে কলেজছাত্রী (২০) শ্লীলতাহানির ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) বিচার দিয়ে সুরাহা না পেয়ে এক বাবা (৫০) ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় জড়িয়ে হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক ইউপি চেয়ারম্যান। আজ রোববার বিকেলে পঞ্চগড় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ প্রতিবাদ জানান পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র রায়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জ্যোতিষ চন্দ্র রায় বলেন, গত বুধবার রাতে মাগুড়া ইউনিয়নের একটি গ্রামে এক ব্যক্তির (৫০) লাশ তাঁর বাড়ির পাশে একটি গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ওই দিন তিনি মারা যাওয়া ব্যক্তির পরিবারের সদস্যের মাধ্যমে জানতে পারেন ওই ব্যক্তি গলায় ফাঁস দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। পরে আটোয়ারী থানা-পুলিশের সহায়তায় পঞ্চগড় সদর থানা-পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পরদিন বিভিন্ন পত্রিকা, টেলিভিশন ও সংবাদমাধ্যমে মেয়ের শ্লীলতাহানির বিচার না পেয়ে বাবা ‘আত্মহত্যা’ করেছেন খবর প্রকাশ হয়। এসব খবরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁকে জড়ানো হয়েছে। অথচ ওই ঘটনায় তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

আরও পড়ুন

মামলার বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র রায় আরও বলেন, গতকাল শনিবার ‘আত্মহত্যাকারী’ ব্যক্তির বড় ছেলে বাদী হয়ে আটোয়ারী থানায় বাবাকে আত্মহত্যা প্ররোচনায় এবং তাঁর বোনকে ধর্ষণের অভিযোগে পঞ্চগড় সদর থানায় মামলা করেন।

দুটি মামলায় পলাশ চন্দ্র বর্মণসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা দুটিতে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কিছু কুচক্রী মহলের যোগসাজশে তাঁকেও (জ্যোতিষ চন্দ্র রায়) জড়ানো হয়েছে। আটোয়ারী থানা-পুলিশ বিষয়টি তদন্ত না করেই মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে ৫ নম্বর আসামির তালিকায় তাঁর (জ্যোতিষ) নাম উল্লেখ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে নিহত ব্যক্তির বড় ছেলে ও মামলার বাদী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, চেয়ারম্যান বিচার করবেন না, এ রকম কথা বলেননি। তিনি বিচার করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দেরি করছিলেন, এ জন্য ধৈর্যহারা হয়ে যাচ্ছিলেন। ১ ফেব্রুয়ারি বেলা দুইটায় বৈঠক বসার কথা ছিল। কিন্তু অভিযুক্ত পলাশ উপস্থিত হননি। পরে একজন ইউপি সদস্য ফোন করে জানান, বৈঠকের নতুন তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যানের কাছে করা অভিযোগে ধর্ষণের কথা উল্লেখ না থাকার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ লোকলজ্জায় ধর্ষণের বিষয়টি লিখিত অভিযোগে বলিনি। কিন্তু চেয়ারম্যান সাহেবকে মৌখিকভাবে জানিয়েছিলাম।’

এদিকে সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বলেন, বাদীর দায়ের করা এজাহারে আসামির তালিকায় ইউপি চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র রায়ের নাম ছিল না। তবে এজাহারের বর্ণনায় ইউপি চেয়ারম্যানের নাম আছে। সেই হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে আসামির তালিকায় চেয়ারম্যানের নাম উঠে এসেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।