কক্সবাজারে পাহাড়খেকোদের তালিকা করার ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের নির্দেশ

কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নে সরকারি পাহাড় কাটার চিত্র। সম্প্রতি তোলা
ছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীতে সংরক্ষিত পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত, পাহাড়ে কী পরিমাণ মাটি কাটা অথবা বিক্রি হয়েছে, তা নিরূপণ করে পাহাড়খেকোদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন পরিবেশ আদালত। এ বিষয়ে ২৫ আগস্টের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পরিবেশ আদালত কক্সবাজারের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

কক্সবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাজাহান ইলাহী নূরী প্রথম আলোকে বলেন, ৮ আগস্ট প্রথম আলোতে ‘সরকারি পাহাড় কেটে মাটির ব্যবসা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি বিচারকের নজরে আসে। ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই পরিবেশ অধিদপ্তরকে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশটি দিয়েছেন বিচারক।

শাহাজাহান ইলাহী আরও বলেন, প্রতিবেদনে মাটি কেটে বিক্রি করার সচিত্র প্রমাণ থাকলেও কে বা কারা মাটি বিক্রি করছেন, তাঁর বিস্তারিত নেই। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে প্রাথমিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে অপরাধীদের শনাক্ত, সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ, ঘটনাস্থলের খসড়া মানচিত্র প্রস্তুত এবং পাহাড়ের কী পরিমাণ মাটি কাটা হয়েছে, তা নিরূপণ করে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এর আগে ৬ আগস্ট প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘কক্সবাজারের পিএমখালীতে পাহাড় কেটে মাটির ব্যবসার ধুম, প্রশাসন নির্বিকার’ শীর্ষক শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে পাহাড় ধ্বংস ও মাটির ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশিত হয়। পিএমখালী ইউনিয়নের ছনখোলার ঘোনারপাড়ার (তেইনাকাটা) সংরক্ষিত বনের পাঁচ-ছয়টি পাহাড় কেটে বিপুল মাটি সাবাড় করা হয়েছে।

আদালতের আদেশে বলা হয়, পরিবেশদস্যুরা নির্বিচার সরকারি পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। পাহাড় একটি অমূল্য সম্পদ। প্রাকৃতিক পাহাড়ে ফলদ ও বনজ গাছ, তরুলতা প্রকৃতির আশীর্বাদে গড়ে ওঠে। এসব পাহাড়ে বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখির অবাধ বিচরণ ও নিরাপদ আশ্রয়স্থল। এসব পাহাড় নানাভাবে পরিবেশকে রক্ষা করে এবং পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কক্সবাজার প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এলাকা। এখানে পরিবেশের যেকোনো বিপর্যয় স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।