শিক্ষার্থী হাসনার দুটি কিডনিই নষ্ট, অর্থাভাবে হচ্ছে না চিকিৎসা

হাসনা আক্তার ওরফে রূপা
ছবি: সংগৃহীত

হাসনা আক্তার ওরফে রূপা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। কিন্তু স্কুলে যাওয়া, পরীক্ষা দেওয়া হচ্ছে না তার। ছয় মাস ধরে সে শয্যাশায়ী। চিকিৎসকেরা বলেছেন, তার দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। ছয় মাস ধরে সুনামগঞ্জ ও সিলেটের হাসপাতালে হাসনাকে নিয়ে ঘুরছে তার পরিবার। কিন্তু অর্থাভাবে চিকিৎসা কার্যক্রম এগোচ্ছে না। ফলে দিন দিন তার অবস্থার অবনতি হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের নতুন হাছননগর এলাকার বাসিন্দা হাছান আলী ও রুবী আক্তারের মেয়ে হাসনা আক্তার (১৪)। সে শহরের সুনামগঞ্জ বালিকা উচ্চবিদ‍্যালয়ে পড়ে। তার ছোট আরেক ভাই ষষ্ঠ ও ছোট বোন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। অভাবের সংসার তাদের। বাবা একসময় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। এখন সেই কাজ নেই।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হাসনা ছয় মাস আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনেরা জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। এরপরই জানা যায়, তার দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। পরে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে একাধিকবার চিকিৎসা করায় পরিবার। ৯ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল হাসনা। চিকিৎসকেরা বলেছেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু দরিদ্র বাবার পক্ষে ঢাকায় যাওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি মেয়েকে নিয়ে সুনামগঞ্জ ফিরে এসে আবার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। মঙ্গলবার সকালে অবস্থার অবনতি হলে হাসনাকে সিলেট এম এ জি  ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। কিন্তু টাকা না থাকায় হাসনাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান বাবা হাছান আলী।

হাছান আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বেকার। হাত খালি। এত দিন মানুষের সাহায্যে চিকিৎসা করিয়েছি। সিলেট যাব, এই সামর্থ্য নাই। মেয়েটার কষ্ট হচ্ছে, রাতে ঘুমাতে পারে না। কান্না দেখলে নিজেকে স্থির রাখতে পারি না। আমি অসহায়। মেয়েকে বাঁচাতে মানুষের সাহায্য চাই।’

সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ মেডিকেল কর্মকর্তা বিষ্ণু প্রসাদ চন্দ প্রথম আলোকে বলেন, হাসনার অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। ডায়ালাইসিস লাগবে। তার কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। তাকে দ্রুত সিলেট অথবা ঢাকায় নেওয়া দরকার।