সস্তায় স্বর্ণমুদ্রা কেনার প্রলোভনে পড়ে...

অপরাধ
প্রতীকী ছবি

সস্তায় স্বর্ণমুদ্রা কেনার প্রলোভনে পড়ে তিন লাখ টাকা খুইয়েছেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কামরুল ইসলাম (৩৮) নামের এক ব্যবসায়ী। গতকাল মঙ্গলবার জনতার হাতে প্রতারক চক্রের দুজন আটক হয়েছেন। পরে আটক দুজনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

ভুক্তভোগী কামরুল ইসলামের বাড়ি উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে। সোহাগী বাজারে তাঁর একটি কাপড়ের দোকান আছে।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পীরজাদা শেখ মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, প্রতারণার শিকার কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। আটক দুজনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বুধবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের ধরার জন্য গ্রেপ্তার দুজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে।

কামরুলের সঙ্গে কথা বলে ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার আজাদ শেখ (৩২) ও রবিউল শেখ (৩২) নামে দুজনকে নিয়ে আমির আলী নামের এক ব্যক্তি গত ২৮ জানুয়ারি তাঁর দোকানে আসেন। দরদাম করে তাঁর দোকান থেকে একটি লুঙ্গি কেনেন তাঁরা। আমির আলী নিজেকে সিমেন্টের খালি বস্তা ক্রয়কারী ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দেন। লুঙ্গি কেনার সময় আমির আলী নানা আলাপচারিতার একপর্যায়ে তাঁকে (কামরুল) বলেন, তাঁর ছোট ভাই রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। কয়েক দিন আগে ঈশ্বরগঞ্জের এক বাড়িতে দালান নির্মাণের কাজ সময় গর্ত খুঁড়ে মাটির নিচ থেকে ৬৭০টি স্বর্ণমুদ্রা পেয়েছেন। তিনি এসব মুদ্রা সস্তায় বিক্রি করতে চাইলে কিনতে রাজি হন কামরুল। মুদ্রা যাচাই করে দেখার জন্য একটি মুদ্রা কামরুলের হাতে দেন আমির আলী। কামরুল মুদ্রাটি পরীক্ষা করে আসল স্বর্ণের বলে ধারণা পান। পরে আমির আলী ও বাকি দুজনের সঙ্গে দরদাম করে ৬৭০টি স্বর্ণমুদ্রার ছয় লাখ টাকায় কিনে নিতে কথা পাকাপাকি করেন কামরুল।

১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে আমির আলী, আজাদ শেখ ও রবিউল শেখসহ কয়েকজন সোহাগী বাজারের বড় মসজিদের সামনে এনে কামরুল ইসলামকে খবর দেন। সেখানে গিয়ে কামরুল ইসলাম তাঁদের কাছে ক্রয়ের বায়না বাবদ অগ্রিম তিন লাখ টাকা তুলে দেন। বাকি টাকা মুদ্রা হস্তান্তরের সময় দেবেন বলে জানান।

এরই মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সোহাগী রেলস্টেশনে এসে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন প্রতারক চক্রের সদস্যরা। এ সময় কামরুলের সন্দেহ হলে তিনি পরিচিত কয়েকজনকে স্টেশনে ডেকে আনেন। তখন প্রতারকের চক্রের সদস্যরা একটি অটোরিকশায় চড়ে দ্রুত ঈশ্বরগঞ্জের দিকে যেতে থাকেন। পরে কামরুল মোটরসাইকেলে নিয়ে ধাওয়া করে ঈশ্বরগঞ্জ-সোহাগী সড়কের হাটুলিয়া এলাকায় অটোরিকশার গতিরোধ করেন। এ সময় আমির আলীসহ কয়েকজন দৌড়ে পালিয়ে যান। জনতার হাতে আটক হন আজাদ শেখ ও রবিউল শেখ। পরে দুজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।