খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: উদ্বোধন হলো ‘শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ’
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের প্রথম নামকরণ করা হয়েছিল ‘বিজয় তোরণ’। গত বছরের ৩০ জুন ওই নামে নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনও করা হয়। ৫ আগস্টের পর নির্মাণাধীন ওই ফটকের নাম ‘শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ’ রাখেন শিক্ষার্থীরা। লাল রং দিয়ে দেয়ালে তাঁরা নামটি লিখেও রাখেন। সেই নামেই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক গতকাল রোববার দুপুরে উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় নিহত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মীর মাহফুজুর রহমানের (মুগ্ধ) স্মৃতি রক্ষার্থে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ’ নামকরণ করা হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে আয়োজিত তাঁর স্মরণসভায় শিক্ষার্থীরা ওই দাবি করেছিলেন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ডিসিপ্লিনের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন মীর মাহফুজুর রহমান (মুগ্ধ)। গত বছরের মার্চে স্নাতক শেষ করে তিনি খুলনা ছেড়ে ঢাকায় চলে যান। ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। মৃত্যুর আগমুহূর্ত পর্যন্ত তিনি আন্দোলনরত ক্লান্ত-শ্রান্ত শিক্ষার্থী-জনতাকে ‘ভাই, পানি লাগবে? পানি?’ বলছিলেন। এ সময় তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা সবাইকে নাড়া দেয় প্রবলভাবে।
ফটক উদ্বোধন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে আলোচনা সভা হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, ‘শহীদ মীর মুগ্ধদের আত্মত্যাগে নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। তরুণেরা জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে দেশের প্রয়োজনে তাঁরা যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। এই বীর শহীদদের স্মৃতি রক্ষার দায়িত্ব আমাদের।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।
জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে আলোচনা সভা শুরু হয়। পরে জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।