একসময়কার ঐতিহ্যবাহী ভেসপা স্কুটার মহাসড়কে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটি-দুটি নয়; একসঙ্গে প্রায় দেড় শ ভেসপা। স্কুটারগুলো পুরোনো হলেও দেখতে এখনো যৌবনা। এসব ভেসপাপ্রেমীকে নিয়ে আজ শুক্রবার দিনভর গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার একটি রিসোর্টে এক মিলনমেলার আয়োজন করা হয়। উদ্যোগটি নেয় অনলাইনভিত্তিক গ্রুপ ভেসপা ক্লাব বাংলাদেশ।
উপজেলার রাঙামাটি ওয়াটার রিসোর্ট থেকে প্রায় দেড় শ ভেসপা নিয়ে শোভাযাত্রা বের করেন ভেসপাপ্রেমীরা। আয়োজকদের মাধ্যমে জানা গেল ভেসপার ইতিহাস ও ঐতিহ্যও। তাঁরা জানান, ইতালির বিখ্যাত গাড়ি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান পিয়াজিও ১৯৪৬ সালে প্রথম ভেসপা স্কুটার বাজারে আনে। এরপর সারা বিশ্বে এই স্কুটার ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। ইঞ্জিনের শব্দ শুনলে মনে হয়, মেজাজ হারিয়ে যেন কোনো বোলতা ওড়াউড়ি করছে। বোলতাকে ইতালির ভাষায় বলা হয় ভেসপা। আর সে নামেই নামকরণ করা হয় স্কুটারটির।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বাজারে এলেও ভেসপা বাংলাদেশে জনপ্রিয়তা লাভ করে ষাটের দশকে। ওই সময় সারা বিশ্বে প্রায় ১০ লাখ ভেসপা বিক্রি হয়। বর্তমানে সারা দেশে নতুন-পুরোনো মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার ভেসপা বাইক রয়েছে বলে জানান আয়োজকেরা।
ভেসপা ক্লাব অব বাংলাদেশ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ষাটের দশকে বাংলাদেশে ভেসপার যাত্রা শুরু হলেও সত্তর, আশি ও নব্বইয়ের দশকে তরুণদের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা পায় দুই চাকার এই বাহন। ভেসপাপ্রেমীদের একটি প্ল্যাটফর্মে আনতে ২০১১ সালে রূপক রহমান ভেসপা ক্লাব বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে গত ১২ বছরে ভেসপার প্রতি ভালোবাসা সারা দেশেই ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সারা দেশে ভেসপা ক্লাব ও গ্রুপ বৃদ্ধির জন্য নানাভাবে চেষ্টা ও সহযোগিতা চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় ভেসপা ক্লাব বাংলাদেশকে চলতি বছর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ভেসপা ওয়ার্ল্ড ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
আয়োজকেরা জানান, সারা দেশ থেকে আসা ভেসপাপ্রেমীদের অংশগ্রহণে ভেসপা ক্লাব বাংলাদেশের এক দশক পূর্তি, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্তি ও ২৫ হাজার সদস্যের ক্লাব উদ্যাপনের জন্য বাৎসরিক উৎসব অনুষ্ঠান বাংলাদেশ ভেসপা ডেইজ-২০২৩ পালন করা হচ্ছে। ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডমিন রূপক রহমান বলেন, ‘এই আয়োজনে সারা দেশের ২০০ ভেসপাপ্রেমী এই মিলনমেলায় যোগ দিয়েছেন। আমরা স্কুটিজীবনের ভালোবাসা ও ঐতিহ্য সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছি।’