বইয়ের চেয়ে পত্রিকার পাঠক বেশি

কিশোরগঞ্জের জেলা গণগ্রন্থাগারে পত্রিকা পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে।ছবি: প্রথম আলো

কিশোরগঞ্জ জেলা গণগ্রন্থাগারে রয়েছে ১৬ হাজারের বেশি বই। রয়েছে বেশ কয়েকটি ম্যাগাজিন ও পত্রিকা। তবে গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, এখন আর আগের মতো তেমন পাঠক নেই। যাঁরা আসেন, তাঁরা বেশির ভাগই চাকরির সহায়ক বই ও পত্রিকা পড়তে আসেন। মুঠোফোন ও ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কারণে ছাপা অক্ষরের বইয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন পাঠকেরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র পুরান থানা এলাকায় ১৯৫৯ সালে জেলা গণগ্রন্থাগারটি (পাবলিক লাইব্রেরি) প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনতলাবিশিষ্ট এ গ্রন্থাগার পাঠকের আনাগোনায় খুবই জমজমাট ছিল। করোনার পর পাঠকের সংখ্যা অনেক কমে যায়। তবে এখন আবার অল্প অল্প করে পাঠক আসা শুরু করেছেন। তাঁদের ধরে রাখতে নতুন করে আরও বই সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের নামে কর্নারসহ কয়েকটি বইয়ের কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। সংগ্রহ করা হয়েছে বিশ্বের নানা দেশের দুর্লভ মুদ্রা।

গণগ্রন্থাগার সূত্র জানায়, সপ্তাহের ছয় দিন বেলা দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত গ্রন্থাগার খোলা থাকে। বর্তমানে গ্রন্থাগারে প্রতিদিন প্রায় ২০০ পাঠক আসেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রন্থাগারে গিয়ে দেখা যায়, তরুণ ও স্কুল-মাদ্রাসার পাঠকের বেশির ভাগ কেবল পত্রিকা আর ম্যাগাজিন পড়ছেন। কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দল বেঁধে পড়াশোনা করতে দেখা যায়। এ সময় কেবল দু–তিনজন বয়োজ্যেষ্ঠ পাঠককে বই পড়তে দেখা যায়।

পাঠকদের একজন আবদুল মতিন বলেন, তরুণদের এখন পাঠাগারে এসে বই পড়তে খুবই কম দেখা যায়। তাঁদের বেশির ভাগই শুধু পত্রিকা পড়তে আসেন।

পত্রিকা পড়তে আসা আশিক আকরাম বলেন, ‘লেখাপড়া শেষ হওয়ায় এখন চাকরির সন্ধানে আছি। সে জন্য এখানে নিয়মিত পত্রিকা পড়ার পাশাপাশি চাকরির বিজ্ঞাপনও দেখতে আসি।’

জেলা পাবলিক লাইব্রেরি সূত্র জানায়, বর্তমানে তাঁদের পাঠাগারে প্রতিদিন ২০০–২৫০ পাঠক পড়তে আসেন। তবে করোনার মহামারির পর পাঠকসংখ্যা খুবই কম ছিল। তখন ১০–২০ জন পাঠক আসতেন প্রতিদিন। করোনার আগেও এ গ্রন্থাগারে এত পাঠক ছিল না। কারণ, সে সময় এখানে আসতে অনেক নিয়মকানুন ছিল। এখন কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাঁদের বই-খাতা নিয়ে গ্রন্থাগারে প্রবেশ করতে পারেন। তাঁরা দীর্ঘ সময় বসে নিজেদের মতো পড়াশোনা করে চলে যান।

জেলা পাবলিক লাইব্রেরির সম্পাদক মু. আ লতিফ বলেন, গত কয়েক বছর নানা কারণে পাঠকের সংখ্যা কম থাকলেও বর্তমানে তাঁরা পাঠক বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। এখন পাঠকের সংখ্যা আগের চেয়ে তুলনামূলক বেশি। পাঠকদের জন্য এখানে রয়েছে ১৬ হাজারের ওপরে বই। প্রতিদিন প্রায় ২০টি বাংলা, ইংরেজি দৈনিক ও কয়েকটি ম্যাগাজিন রাখা হয়। দিবস উপলক্ষে তাঁরা নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন।