নীলফামারীতে ছড়া ও কবিতা লিখন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ

পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে অতিথিরা। শনিবার সকালে নীলফামারী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরেছবি: প্রথম আলো

‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা, ২০৪১-এ বাংলাদেশ হবে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ। আমার কাছে মনে হচ্ছে, সেই স্মার্ট বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে নীলফামারী। কারণ, যেই শহরে, যে জেলায় এত তরুণ কবি থাকে, লেখক থাকে, এত চমৎকার করে নৃত্য পরিবেশন করল, সুন্দর করে গান করল, সেই শহর বাংলাদেশের অন্যান্য শহরের চেয়ে একটু হলেও এগিয়ে আছে।’

বিশিষ্ট অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু আজ শনিবার সকালে নীলফামারী শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত ছড়া ও কবিতা লিখন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।  ভিশন-২০৪১ নীলফামারী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর।

অনুষ্ঠানে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘করোনার জন্য আমাদের এ কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়েছে। আবারও আমরা শুরু করলাম। এবারও আমরা বিপুল সাড়া পেয়েছি। আমরা আশা করছি, ভবিষ্যতেও আমরা এটি চালিয়ে যাব।’

পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে দর্শকদের একাংশ। শনিবার সকালে নীলফামারী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে
ছবি: প্রথম আলো

খুদে কবিদের উদ্দেশে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘বছরে একবার ছড়া-কবিতা লিখলে হবে না, নিয়মিত লিখতে হবে। এ জন্য আমরা প্রতি তিন মাসে একটি করে পত্রিকা বের করব। সেখানে তোমাদের ছড়া-কবিতা ছাপা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই সংগঠনের নাম ছিল ভিশন-২০২১। এখন আমরা দাঁড়িয়ে আছি ২০২৪-এ। ইতিমধ্যে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জানতে পেরে আমাদের এ অনুষ্ঠান নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন, ভিশন-২০২১ কে ভিশন ২০৪১ হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার জন্য। তাই আজ থেকে এটি হবে ভিশন-২০৪১।’

বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। এতে সভাপতিত্ব করেন ভিশন-২০৪১ নীলফামারীর প্রধান সমন্বয়ক মো. ওয়াদুদ রহমান।

উদ্বোধনী বক্তব্যে শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল খুদে কবিদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা যে অনেক সুন্দর কবিতা লিখতে পেরেছ, তার কারণটা কি জানো? তার একটা কারণ হচ্ছে, তোমরা যে ভাষায় কথা বলো, সেটা বাংলা ভাষা, পৃথিবীতে এর চেয়ে মিষ্টি ভাষা আর নেই। এটা আমার কথা নয়, এটা সারা পৃথিবীর মানুষ মিলে ঠিক করেছে। আমার কথা বিশ্বাস না করলে ইন্টারনেটে গিয়ে টাইপ করে লেখো। হুইজ ল্যাঙ্গুয়েজ ইজ দ্য মোস্ট বিউটিফুল ল্যাঙ্গেুয়েজ ইন দ্য ওয়ার্ল্ড। দেখবে, ওরা বলবে বেঙ্গলি, বাংলা ভাষা। তোমরা পৃথিবীর সবচেয়ে মিষ্টি ভাষায় কথা বলো। এটা ১ নম্বর কারণ। আরেকটা কারণ, বাংলা ভাষা নরম একটা ভাষা।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন কবি ও শিশুসাহিত্যিক আখতার হুসাইন, সুজন বড়ুয়া, নীলফামারী পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুজার রহমান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মসফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের আয়োজকেরা বলেন, নীলফামারীর এক শহরে ১ লাখ ১৪ হাজার খুদে কবি। এসব কবি প্রতিনিয়ত লিখছে ছড়া, কবিতা। ধাপে ধাপে তৈরি হওয়া এসব কবি ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে। ২০১৫ সাল থেকে জেলা শহরের ভিশন-২০২১ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে এসব কবি। এর ধারাবাহিকতায় শনিবার বেলা ১১টার দিকে দেশ বরেণ্য একাধিক ব্যক্তির অংশগ্রহণে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ষষ্ঠ দফায় অনুষ্ঠিত হলো ছড়া ও কবিতা লেখা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান এবং খুদে কবিদের লেখা কবিতা ও ছড়ার বাইয়ের মোড়ক উন্মোচন। পরে সেখানে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।