চৌমুহনীতে ১৪৪ ধারা চলছে, সতর্ক অবস্থানে পুলিশ

চৌমুহনীমুখী বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি করছে পুলিশ। আজ বুধবার সকালে চৌমুহনী পশ্চিম বাজারে
ছবি: প্রথম আলো

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ স্টেডিয়ামে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেওয়ায় বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা চলছে। আজ বুধবার সকাল ছয়টা থেকে পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা কার্যকর হয়েছে। এতে আজ সকাল থেকে ১৪৪ ধারার আওতাধীন এলাকায় অনেক ব্যবসায়ী দোকানপাট খোলেননি। সড়কে যানবাহন ও মানুষের চলাচলও অন্যান্য দিনের তুলনায় কম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সকাল থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে।

আজ বেলা ১১টার দিকে শহরের চৌমুহনী চৌরাস্তা, কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, মেডিকেল কলেজ এলাকা, স্টেডিয়াম এলাকা, বেগমগঞ্জ পোল, চৌমুহনী রেলগেট, কাচারিবাড়ি মসজিদ এলাকাসহ প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া চৌমুহনীমুখী বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি করছে পুলিশ। তবে সকাল থেকে বিএনপি কিংবা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি চোখে পড়েনি।

এদিকে চৌমুহনী বাণিজ্যিক শহর হলেও ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ কারণে শহরের অনেক ব্যবসায়ী দোকান খোলেননি।

চৌমুহনী ডিবি রোডের ব্যবসায়ী আবুল হোসেন প্রতিদিন সকাল নয়টার মধ্যে দোকান খোলেন। তবে আজ তিনি দোকান খোলেননি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রাজনৈতিক দলের সংঘর্ষ শুরু হলে কিছু সুযোগসন্ধানী ব্যক্তি অকারণে দোকানপাটে আঘাত করেন। তাঁদের লক্ষ্য থাকে লুটপাট করা। তাই তিনি সতর্কতার জন্য দোকান বন্ধ রেখেছেন।

প্রসঙ্গত, জ্বালানি তেল, পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যে ঊর্ধ্বগতিসহ সরকারের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আজ বুধবার বেলা তিনটায় বেগমগঞ্জ স্টেডিয়ামে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে। এরপর বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে উপজেলা আওয়ামী লীগ একই স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়। পরে দুই পক্ষই অনড় অবস্থানে থাকলে চৌমুহনী পৌরসভা এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার আজ সকাল ছয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চৌমুহনী পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন।

প্রশাসনের ১৪৪ ধারা জারির আওতায় চৌমুহনী পৌরসভা এলাকায় সব ধরনের গণজমায়েত, সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও ধর্মী সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে চারজনের অধিক লোক একসঙ্গে জড়ো হওয়াকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাক্ষ্যা চন্দ্র দাশ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের জন্য সব প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপির কর্মসূচি বানচাল করতেই আওয়ামী লীগও একই স্থানে সমাবেশের ডাক দেয়। এরপর প্রশাসন পুরো চৌমুহনী এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে। প্রশাসনের সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা রেখে চৌমুহনীতে কর্মসূচি পালন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে চৌমুহনীর বাইরে বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক কর্মসূচি পালন করা হবে।

জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, চৌমুহনীতে একই স্থানে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও গণজমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে কেউ যেন কোনো কর্মসূচি পালন না করতে পারে, সে জন্য বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।