সিলেটে নদ-নদীর পানি বাড়ছে, তিন স্থানে বিপৎসীমা অতিক্রম

সিলেটে গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আজ বুধবার দুপুরে গোয়াইনঘাট উপজেলার শিমুলতলায়ছবি: প্রথম আলো

সিলেটে কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়েছে। এরই মধ্যে কিছু নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এতে তিন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি রাস্তাঘাট ডুবেছে।

বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা।

পাউবোর তথ্য মতে, সিলেটে গত কয়েক দিন ধরে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এ ছাড়া ভারতের মেঘালয়ে টানা বৃষ্টির ফলে উজান থেকে এসব পানি সিলেটে আসছে। এতে সিলেটের নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ বুধবার জেলার তিনটি স্থানে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।

আজ বুধবার বেলা তিনটা পর্যন্ত পাউবোর তথ্য অনুযায়ী, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ৮৪ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপৎসীমার ১ দশমিক ০৯ মিটার ওপরে। এ ছাড়া কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে পানি ১৬ দশমিক ১২ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৭২ মিটার ওপরে। একইভাবে গোয়াইনঘাটের সারি নদীতে পানি ১৩ দশমিক ১৮ মিটারে অবস্থান করছিল। এ নদীর পানি এখন বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৮৩ মিটার ওপরে আছে। সুরমা ও কুশিয়ারা নদী ছাড়াও জেলার লোভা, ডাউকি, সারি-গোয়াইন, ধলাইসহ সব কটি নদ-নদীর পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এদিকে জেলার গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলার কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব উপজেলার বেশকিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে অনেক বাড়িঘরেই পানি উঠেছে। লোকজন বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন। আজ বুধবার দুপুরে গোয়াইনঘাট উপজেলার সারি-গোয়াইনঘাট এবং গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এ দুটি সড়কে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, পানি দ্রুত বাড়ছে। উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কিছু গ্রামের বাড়িঘর প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি সড়কও ডুবেছে। ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে কিছু মানুষ এসে উঠেছেন। অব্যাহত বৃষ্টিপাত থাকায় পাহাড়ি ও টিলা এলাকার পাদদেশে বসবাসকারীদের আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে উপজেলা প্রশাসন অনুরোধ জানাচ্ছে।

পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ প্রথম আলোকে বলেন, নদ-নদীর পানি ক্রমেই বাড়ছে। তাই স্বাভাবিকভাবে বন্যার ঝুঁকিও বাড়ছে। এরই মধ্যে জেলার অন্তত তিনটি পয়েন্টে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। আরও কিছু পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এ ভাবে পানি বাড়তে থাকলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা আছে।