স্বামীকে কবরস্থানে আটকে রেখে স্ত্রী-মেয়েকে অপহরণ নয়, ভয়ে আত্মগোপনে ছিলেন তাঁরা: পুলিশ

ভাড়া বাড়ির নিচতলার কক্ষে থেকে মা ও মেয়ে অপহৃত হয়েছেন বলে গৃহকর্তা অভিযোগ করেছেন। সেখানে এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে জিনিসপত্র। আজ সকালে পাবনা জেলা সদরের আরিফপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থান এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

পাবনায় এক ব্যক্তিকে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার পর তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে অপহরণের অভিযোগটি সঠিক নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, পূর্ববিরোধের জেরে ওই বাসায় হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। পরে হামলাকারী ব্যক্তিদের ভয়ে স্ত্রী ও মেয়ে আত্মগোপনে ছিলেন।

গত শুক্রবার রাতে জেলা সদরের আরিফপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থান এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। গতকাল শনিবার রাতে নিখোঁজ মা-মেয়েকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনায় পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।

ওসি আবদুস সালাম বলেন, ভুক্তভোগী ব্যক্তি বিদেশে লোক পাঠানোর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এ কারণে জেলা শহরের আরিফপুর এলাকার একটি চক্রের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। সম্প্রতি টাকাপয়সা নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। শুক্রবার রাতে ওই ব্যক্তি স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালককে নিয়ে ভাড়া বাসায় ওঠেন। খবর পেয়ে ওই চক্র সেখানে হামলা চালায়। তাঁকে আটকে রেখে বাসায় ভাঙচুর ও কিছু মালামাল লুট করে। রাতভর তাণ্ডব চলার পর ভয়ে স্ত্রী ও মেয়ে বাসা থেকে পালিয়ে অন্যত্র আত্মগোপন করেন। এদিকে তাঁদের খুঁজে না পেয়ে ওই ব্যক্তি অপহরণের অভিযোগ করেন। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ তাঁদের অবস্থান শনাক্ত করে উদ্ধার করে। বর্তমানে ওই পরিবারের চারজনই নিরাপদে আছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

প্রসঙ্গত, ভুক্তভোগী ব্যক্তির বাড়ি আটঘরিয়া উপজেলার একটি গ্রামে। কিছুদিন আগে তিনি এক নারীকে বিয়ে করেন। ওই নারীর ১৩ বছরের একটি মেয়ে আছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে তিনি স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালককে নিয়ে আরিফপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থান এলাকার একটি ভাড়া বাসার নিচতলায় ওঠেন। জিনিসপত্র গোছানোর পর তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েন। দিবাগত রাত দুইটার দিকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত ফটকে এসে ডাকাডাকি করে। দরজা না খোলায় তারা কৌশলে ভেতরে ঢুকে বাসায় ভাঙচুর চালায়। ওই ব্যক্তিকে পাশের কবরস্থানে আটকে রাখা হয়। ভোরের দিকে দুর্বৃত্তরা তাঁকে ছেড়ে দিলে তিনি বাসায় ফিরে স্ত্রী-মেয়েকে না পেয়ে তাঁদের নিখোঁজ ও অপহরণের অভিযোগ করেন।