১৪ বছর আগে বিএনপি নেতা হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদসহ ১২২ জনের নামে মামলা

সাবেক তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলকফাইল ছবি

নাটোরের সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে জাকির হোসেন নামের এক বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলকসহ ১২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাকির হোসেনের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে সিংড়া আমলি আদালতে মামলাটি করেন।

আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুমন আলী মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দেন। কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মোস্তফা কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত জাকির হোসেন বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। ২০১০ সালের ৫ মে রাজশাহীতে বিএনপির মহাসমাবেশে যোগদান করতে যাওয়ার পথে নাটোরের সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে নেতা-কর্মীদের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়।

মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক (৪৪) ছাড়া তাঁর শ্যালক লুৎফুল হাবীব (৪১), সিংড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস (৪৩), উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল ওয়াদুদ মোল্লা (৫৬), পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ডালিম আহমেদ (৪৩), উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল তালুকদারসহ (৪৩) ১২২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি ২৫০ জন।

এজাহারে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন জাকির হোসেন অন্য নেতা-কর্মীদের নিয়ে মিনিবাসে করে বগুড়া থেকে রাজশাহী যাচ্ছিলেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জুনাইদ আহ্‌মেদের নেতৃত্বে কয়েক শ আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্ত তাঁদের গাড়িবহরে হামলা করে। একপর্যায়ে আসামিরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা দিয়ে তাঁর স্বামী জাকির হোসেনকে বেধড়ক মারধর করে মহাসড়কে ফেলে রাখেন। এ সময় বিএনপির গাড়িবহরের বাস, মিনিবাস ও মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে ৭৫ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করেন। বিএনপি নেতারা পালানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা ফাঁকা গুলি করে ত্রাসের সৃষ্টি করে।

গুরুতর আহত জাকির হোসেনকে নেতা–কর্মীরা প্রথমে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে পথে রণবাঘা এলাকায় পৌঁছালে বেলা সাড়ে তিনটায় জাকির হোসেন মারা যান। সে সময় থানায় মামলা করতে গেলে আসামিদের প্রভাবে পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে বাদী বিলম্বে মামলা করতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান।