গাজীপুরে পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে ট্রেনে কাটা পড়ল লেবু বিক্রেতার পা

আহত পরিতোষ চক্রবর্তীকে প্রথমে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে পাঠানো হয় ঢাকা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে
ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলক্রসিংয়ের পাশে বসে পরিতোষ চক্রবর্তী (৪৫) নামের এক ব্যক্তি লেবু বিক্রি করছিলেন। হঠাৎ পুলিশ দেখে দৌড়ে পালাতে গিয়ে ট্রেনের নিচে পড়ে তাঁর পায়ের গোড়ালি থেকে কাটা পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুর মহানগরীর জয়দেবপুর জংশনের পাশে আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে।

আহত লেবু বিক্রেতা পরিতোষ নওগাঁর নওগাঁদা গ্রামের আত্রাই সদর এলাকার বাসিন্দা। তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র বা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, পরিতোষ রেললাইনের পাশে প্রতিদিনই অনেকের মতো হকারি করে লেবু বিক্রি করেন। আজও ওই স্থানে লেবু বিক্রি করছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে তিনি লেবুগুলো অল্প অল্প করে বিক্রির জন্য পলিথিনে ভরছিলেন। এ সময় পুলিশের এক সদস্য গিয়ে তাঁকে লাঠি দিয়ে পায়ে বাড়ি দেন। আত্মরক্ষার্থে পরিতোষ ওই স্থান থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে পড়ে যান। তখন ওই পুলিশ লাথি মারলে রেললাইনের ওপর পড়ে যান পরিতোষ। তাৎক্ষণিক একটি ট্রেন পরিতোষের বাঁ পায়ের ওপর দিয়ে চলে গেলে তাঁর পা গোড়ালি থেকে কাটা পড়ে।
ট্রেন চলে যাওয়ার পর আশপাশের লোকজন পরিতোষকে উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুলিশের ওই সদস্যের নাম মো. জহির। তিনি গাজীপুর সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই)। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। জহিরের মুঠোফোনটির সংযোগও বন্ধ পাওয়া যায়।

জয়দেবপুর জংশন রেলওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল্লাহ হিরো বলেন, পুলিশ দেখে দৌড়ে পালাতে গিয়ে লেবু ব্যবসায়ী পরিতোষ দিনাজপুরগামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় পরিতোষ নামের ওই ব্যক্তিকে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র বা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তার দাবি, পরিতোষ বেঁচে গেলেও তাঁর পায়ের পাতাটি রাখা যাবে না।

গাজীপুর মহানগরীর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ রাফিউর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, রেলক্রসিং এলাকায় যাতে হকার না বসতে পারেন, সে জন্য সেখানে প্রতিদিন পুলিশ দায়িত্ব পালন করে। ওই হকার পুলিশ দেখে ভয়ে দৌড়ে যাওয়ার সময় তাঁর পা ট্রেনের নিচে পড়ে। তাঁকে ধাওয়া দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। আহত ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মানবতার কারণে তাঁর খোঁজখবরও রাখা হচ্ছে।