ফেসবুকে চাঁদাবাজির অভিযোগ ছড়ানোর পর গৌরনদী পৌর যুবলীগের দুই নেতাকে ‘বহিষ্কার’

বরিশাল জেলার মানচিত্র

বরিশালের গৌরনদী পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আল আমিন হাওলাদার ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রাসেদ হাওলাদারকে দল থেকে সাময়িক ‘বহিষ্কার’ করেছে উপজেলা যুবলীগ। ‘সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার’ অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. আনিসুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাহাবুব। যদিও উপজেলা কমিটি পৌর কমিটির নেতাকে বহিষ্কারের ক্ষমতা রাখে না বলে জানিয়েছে জেলা যুবলীগের নেতারা।

সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি গৌরনদী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. আনিসুর রহমান তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন হাওলাদারকে ‘চাঁদাবাজ’ আখ্যা দিয়ে পোস্ট দেন। ওই পোস্টে আল আমিন হাওলাদারের ছবিসহ চাঁদাবাজির ২০টি সুনির্দিষ্ট ঘটনা উল্লেখ করেন। একই পোস্ট দেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জোবায়েরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. লুৎফর রহমানসহ অন্য অনেক নেতা। মুহূর্তের মধ্যে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। শত শত নেতা–কর্মী ওই পোস্ট শেয়ার দেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ও দলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।

ওই পোস্টে উল্লেখ করা হয়, জমিজমা–সংক্রান্ত বিরোধ মীমাংসা, জমি কেনাবেচা, শিক্ষক–কর্মচারী নিয়োগ, প্রবাসীদের বাড়ি নির্মাণ, ব্যবসায়ীদের জিম্মি, দোকানঘর দখলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাঁদাবাজি করেছেন আল আমিন হাওলাদার। এ ঘটনার পর গত মঙ্গলবার তাঁকে ‘বহিষ্কার’ করে বিজ্ঞপ্তিতে দেয় উপজেলা যুবলীগ।

যুবলীগ নেতা আল আমিন হাওলাদার পৌরসভার কাউন্সিলরও। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সামাজিকভাবে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন ও ভাবমূর্তি নষ্ট করতে আমার প্রতিপক্ষ ও তাদের সমর্থকেরা মিথ্যাচার করেছে।’ দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছেন। তবে বহিষ্কারের কোনো আদেশ তিনি হাতে পাননি।

দলীয় নেতা–কর্মীরা জানান, উপজেলার টরকী বন্দরে ও কসবা এলাকায় অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আল আমিন হাওলাদারের সঙ্গে পৌর যুলীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক কাওছার ফকির বিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে গত ২৭ সেপ্টেম্বর কাওছার ফকির ও তাঁর দুই অনুসারীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এর পাঁচ দিন পর আল আমিন হাওলাদার ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন কাওছার ফকিরের স্ত্রী। এ ঘটনার জেরে উপজেলায় যুবলীগের রাজনীতিতে উত্তেজনা চলছে।

দুই নেতাকে ‘বহিষ্কারের’ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. আনিসুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো সারা পাওয়া যায়নি। উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাহাবুব প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক বিষয় থাকলেও তিন যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখমের ঘটনাটি মুখ্য বিষয় হিসেবে দেখা হয়েছে। দুই মাস পর জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সবাইকেই প্রয়োজন হবে। যে কারণে দলের ঐক্যর স্বার্থে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’

বরিশাল জেলা যুবলীগের সভাপতি মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘গৌরনদী ক শ্রেণির পৌরসভা। সেহেতু উপজেলা কমিটি পৌর কমিটির কাউকে বহিষ্কার করতে পারেন না। একমাত্র জেলা কমিটি বহিষ্কারের ক্ষমতা রাখেন।’