লোহার কুটিরের সামনে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন। আজ সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহ নগরের বাতিলকল এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা লোহার কুটিরের সামনে সীমানা প্রাচীর তৈরির প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহ নগরের বাতিলকল এলাকায় বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে ‘আমরা ময়মনসিংহবাসী’-এর ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়। এতে বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন।

তৎকালীন মুক্তাগাছার জমিদার মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্যের বাগানবাড়ি হিসেবে নির্মিত আলেকজান্দ্রা ক্যাসল বা লোহার কুটিরকে ঘিরে খাসজমিতে গড়ে উঠেছে ময়মনসিংহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলসহ সাতটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি লোহার কুটিরের সামনে সীমানা প্রাচীর নির্মাণকাজ শুরু করে গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের সামনের সড়ক দিয়ে বেপরোয়া গতিতে চলাচল করা মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ এবং স্কুলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিলেও ময়মনসিংহের নাগরিক সমাজ এ সীমানা প্রাচীর নির্মাণের বিপক্ষে। এর প্রতিবাদেই তাঁরা মানববন্ধন করেছেন।

মানববন্ধনে বক্তারা আজকের (সোমবার) মধ্যেই স্কুল কর্তৃপক্ষকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিল করে ইট খুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ বন্ধ না করায় ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের সমালোচনাও করেন তাঁরা।

বক্তারা বলেন, ময়মনসিংহের লোহার কুটির বিশ্বমানের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। নিজেদের স্বার্থে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে এর সৌন্দর্য নষ্ট করা যাবে না। এ সীমানার মধ্যে মোট সাতটি সরকারি প্রতিষ্ঠান হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী এমন একটি স্থাপনা ঘিরে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান করার সিদ্ধান্তই ছিল ভুল। নেত্রকোনা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় দুটি খেলার মাঠে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর তৈরি করা ধারাবাহিকতায় যেন ময়মনসিংহেও লোহার কুটিরের সামনে প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।

ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক স্বাধীন চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন জনউদ্যোগ নামের নাগরিক সংগঠনের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন আন্দোলনের সভাপতি শিব্বির আহমেদ, ব্রহ্মপুত্র সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক ও নেত্রকোনার বলাইশিমুল মাঠ রক্ষা গণকমিটির সমন্বয়ক আবুল কালাম আল আজাদ প্রমুখ।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, আপাতত সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ বন্ধ করতে বলা হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে।