পটুয়াখালীতে আদালতে হাতাহাতির ঘটনায় বিএনপির ২০ নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
পটুয়াখালীতে আদালতের এজলাসে আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতি ও আসামিদের মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির লাইব্রেরি সম্পাদক মো. মজিবুল হক বিশ্বাস মামলার আবেদন করলে বিচারক ইসরাত জাহান মৌমি আবেদনটি আমলে নিয়ে সদর থানা–পুলিশকে এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দেন। আদালতের পেশকার মাহাবুবুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ কলাপাড়া উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী আইনজীবী মো. মজিবুল হক বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেলা আইনজীবীর সমিতির সিদ্ধান্তে তিনি মামলা করেছেন।’
মামলার আরজিতে ঘটনার তারিখ ২৫ জুন উল্লেখ করা হলেও ঘটনাটি ঘটেছে ২৬ জুন। ওই দিন দুপুরে পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলার জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতিতে জড়ান বিএনপিপন্থী একাধিক আইনজীবী। এ সময় আদালতে হাজিরা দিতে আসা আসামিদের মারধর করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় পক্ষে–বিপক্ষে বিক্ষোভ ও স্লোগানে আদালত চত্বরে উত্তেজনা দেখা দেয়।
মামলার আরজিতে বলা হয়, ২৫ জুন কলাপাড়া উপজেলার একটি মামলার ২১ আসামি পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজিরা দিতে এজলাসে উপস্থিত হন। এ সময় বিচারক বাদী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে ১৯ জনের জামিন মঞ্জুর ও দুই আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। দুই আসামির জামিন নামঞ্জুরে ক্ষুব্ধ হয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমানের উসকানিতে বারান্দায় হট্টগোল সৃষ্টি করেন জামিন পাওয়া আসামিরা। এরপর আইনজীবী নোমানের নেতৃত্বে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও হুমকি দেন আসামিরা। এ ছাড়া জামিন পাওয়া কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে আদালত চত্বরে তাণ্ডব চালিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন বহিরাগতরা। পরে আসামিরা আদালত চত্বর–সংলগ্ন জেলা আইনজীবী সমিতিতে ঢুকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে সমিতি ভবনের দরজা–জানালায় আঘাতে হত্যার হুমকি দেন।
এ বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী ও জেলা যুবদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, স্থানীয় রাজনীতি ও ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে ২৬ জুন আদালতে হাজিরা দিতে আসা একাধিক আসামিদের মারধর করা হয়। একই কারণে ওই ব্যক্তিদের নামে আজ দ্রুত বিচার আদালতে মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া ২৬ জুনের ঘটনায় জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাঁকে নিয়মবহির্ভূত নোটিশ করেন। অথচ ২৬ জুনের ঘটনায় তিনি (জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শরীফ মো. সালাহউদ্দীন) জড়িত। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নোটিশে স্বাক্ষর করার ক্ষমতা রাখেন না বলে তিনি দাবি করেন।