ঢাকার হাসপাতালে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন কক্সবাজারের যুবক, ধরা পড়েনি কেউ

কক্সবাজার জেলার মানচিত্র

ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন কক্সবাজারের যুবক মাসুদ করিম (৩৮)। পূর্বশত্রুতার জেরে ৩ জুন দুপুরে দুর্বৃত্তরা তাঁকে কিরিচ দিয়ে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করে। এতে মাসুদ করিমের গলার অর্ধেকের বেশি অংশ কেটে যায়। সেদিনই তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে পাঠানো হয় ঢাকার হাসপাতালে।

মাসুদ করিম কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের উত্তর হাজিপাড়ার আশরাফ আলীর ছেলে।

পুলিশ ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৩ জুন বেলা দুইটার দিকে পৈতৃক সম্পত্তি দেখার জন্য মাসুদ করিম ঝিলংজা ইউনিয়নের হাজিপাড়ায় যান। সেখানে একটি বাড়ির সামনে একদল সন্ত্রাসী তাঁর ওপর হামলা চালায়। এ সময় মাসুদ করিম মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। শেষে কিরিচ দিয়ে তাঁর গলা কেটে দেওয়া হয়। রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় মাসুদ করিমকে উদ্ধার করে কক্সবাজার শহরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে একই দিন বিকেলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।

৭ জুন আহত মাসুদ করিমের বড় ভাই মো. আবুল হাসনাত বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আসামিরা হলেন উত্তর হাজিপাড়ার গ্রামের মৃত নবাব মিয়ার দুই ছেলে রশিদ মিয়া (৪২) ও কামরুল হাসান মুসা (২৬), মৃত নুরুল ইসলামের তিন ছেলে মোহাম্মদ জুনাইদ (২৭), মো. শাকিব (২৩) ও শোয়েব মোহাম্মদ ওরফে আকাশ (৩০) এবং একই এলাকার মৃত এজাহার মিয়ার ছেলে হামিদ মিয়া (২৮)।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিদের হামলায় মারাত্মক জখম হয়ে মাসুদ করিম মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হত্যা নিশ্চিত করার জন্য আসামিরা মাসুদ করিমের মাথা মাটিতে চেপে ধরে গলার বাঁ পাশে কিরিচ দিয়ে কেটে দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে কক্সবাজারের হাসপাতালের পর তাঁকে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে যেকোনো সময় মাসুদ করিম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারেন বলে এজাহারে বলা হয়।

মামলার বাদী আবুল হাসনাত প্রথম আলোকে বলেন, মাসুদ করিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অথচ আজ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত একজন আসামিও ধরা পড়েনি। আসামিরাও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, জমি নিয়ে বিরোধ এবং পূর্বশত্রুতার জেরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আসামিরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না।