সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভবন থেকে পড়ে বাংলাদেশি তরুণের মৃত্যু

সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভবন থেকে পড়ে মারা যাওয়া সৌরভ মাঝি
ছবি: সংগৃহীত

সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি শহরে ভবন থেকে পড়ে গিয়ে সৌরভ মাঝি (২৩) নামের এক বাংলাদেশি তরুণের মৃত্যু হয়েছে। রোববার ভোররাতে দেশটির রোলা শহরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।  মঙ্গলবার সকালে ওই তরুণের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন পরিবারের সদস্যরা।

সৌরভ মাঝি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার নশাসন ইউনিয়নের মাঝিকান্দি এলাকার সায়েদ মাঝির ছেলে। সৌরভের পরিবার সরকারের কাছে তাঁর লাশটি দ্রুত বাংলাদেশে আনার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আরব আমিরাতে যান সৌরভ মাঝি। এরপর তিনি শারজাহ শহরে রংমিস্ত্রির কাজ করতেন। কিছুদিন আগে রংমিস্ত্রির কাজ ছেড়ে দিয়ে শারজা শহর থেকে রোলা শহরে চলে আসেন। গত রোববার রাতে সৌরভ ও তাঁর দুই বন্ধু রোলা শহরের একটি ভবনে অবস্থান করছিলেন। তখন ওই ভবনে পুলিশ হানা দেয়। ওই ভবন থেকে পাশের একটি ভবনে লাফ দিয়ে পালাতে গিয়ে নিচে পড়ে যান সৌরভ। পরে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছে মৃত্যুর খবর পাঠানো হয়।

সৌরভের ফুফাতো ভাই জামিল আহসান বলেন, ‘আমাদের এক আত্মীয়ের মাধ্যমে সৌরভের মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পেরেছি। ওর ভিসার মেয়াদ ছিল। কেন সে শারজা থেকে পালিয়ে অন্য শহরে গিয়েছি, তা আমরা বুঝতে পারছি না। পুলিশ আসার খবরে ঘাবড়ে ভবন থেকে পালাতে গিয়ে লাফ দিয়েছিল সৌরভ। কিন্তু নিচে পড়ে গিয়ে সে মারা যায়। ওর এমন মৃত্যু মানতে পারছি না।’

সৌরভের বাবা সায়েদ মাঝি বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। সংসারের অভাব দূর করতে ছেলে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়েছিল। সে লাশ হয়ে ফিরবে, তা ভাবতে পারছি না। এখন ওর মাকে কী জবাব দেব? অন্তত শেষবারের মতো ছেলের মুখ দেখতে চাই। সরকারের উদ্যোগে যেন আমার ছেলের মরদেহটি দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়।’

নশাসন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন,‘সৌরভের মৃত্যুর খবর আজ সকালে পেয়েছি। ওর লাশ যাতে দেশে আনার ব্যবস্থা করা হয়, সে জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ করা হয়েছে।’

নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শংকর চন্দ্র বৈদ্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি এক শ্রমিক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। তাঁর মরদেহ কোথায় কী অবস্থায় আছে, সে ব্যাপারে আমাদের কাছে তথ্য নেই। আমরা জানার চেষ্টা করছি। সেখানে আমাদের হাইকমিশনে যোগাযোগ করে লাশ আনার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’