কিশোরগঞ্জে ফুল দেওয়া নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০

কিশোরগঞ্জে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠ‌নিক সম্পাদক লুৎফর রহমান চিকিৎসা নিচ্ছেন। মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালে
ছবি: প্রথম আলো

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ফুল দেওয়া কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার বুরুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফর রহমানসহ ৮–১০ জন সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চারজনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর বিকেলে জেলা শহরের স্টেশন রোড এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা।

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ ১৮ বছর পর কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা ইটনা উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। ইটনায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মিলনায়তনে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফের যোগ দেওয়ার কথা। সে উপলক্ষে তাঁদের ফুল দিতে যাচ্ছিল ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ।

সূত্র জানায়, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়েজ উমানের নেতৃত্বে পাকুন্দিয়া উপজেলার বুরুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় অবস্থান নেয় একটি পক্ষ। অন্যদিকে সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফুর রহমানের নেতৃত্বে আরেকটি পক্ষ জড়ো হয়। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ওই এলাকায় আসার আগেই দুই পক্ষ হাতাহাতি ও সংঘর্ষে জড়ায়। এতে ছাত্রলীগ নেতা লুৎফর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক পাঠাগার সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী আরিয়ান আহমেদসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে বিকেলে জেলা শহরে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ওই অংশের নেতা-কর্মীরা।

আহত ছাত্রলীগ নেতা লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নেতাদের ফুল দিতে গিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের লোকজনের মাধ্যমে হামলার শিকার হয়েছি। হামলায় আমিসহ ৮–১০ জন আহত হয়েছি। এর মধ্যে চারজন সদর হাসপাতালে ভর্তি আছি। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেব।’

তবে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তাঁরা কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে অনুষ্ঠানে ব্যস্ত আছেন।

২০২০ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ উমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফর রহমান। ওই তিনজনকে দিয়ে তিন বছরের বেশি সময় ধরে ছাত্রলীগ চলছে। তাঁদের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্ব একটি পক্ষ সক্রিয় ও সাংগঠনিক সম্পাদকের নেতৃত্বে অন্য পক্ষ সক্রিয়।

কিশোরগঞ্জে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আগমন উপলক্ষে চার দিন আগে সংবাদ সম্মেলন করে ওই তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি বাতিলের দাবি জানান সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফর রহমান। এ ঘটনায় দু-তিন দিন ধরে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।