জঙ্গলে মিলল বগুড়া বিসিক শিল্পনগরীর নৈশপ্রহরীর লাশ

লাশ উদ্ধার
প্রতীকী ছবি

বগুড়া বিসিক শিল্পনগরী এলাকার একটি জঙ্গল থেকে আবদুল বাসেদ (৪৮) নামের এক নৈশপ্রহরীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে লাশটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছে সদর থানার পুলিশ। আবদুল বাসেদ বগুড়ার গাবতলী উপজেলার পাইকার পাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে।

এ নিয়ে গত দেড় বছরে বিসিক শিল্পনগরীর চার নৈশপ্রহরীর লাশ উদ্ধার হলো। বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, বিসিক শিল্পনগরীর শাওন ব্রাদার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানে নৈশপ্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন বাসেদ। গতকাল সোমবার রাতে তিনি ডিউটিতে ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর কারণ হত্যা নাকি দুর্ঘটনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়। কে বা কারা পরে তাঁর লাশ পাশের জঙ্গলে সরিয়ে রাখে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

বিসিক শিল্পনগরীর শাওন ব্রাদার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানে নৈশপ্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন বাসেদ। গতকাল সোমবার রাতে তিনি ডিউটিতে ছিলেন। গত দেড় বছরে বিসিক শিল্পনগরীর চার নৈশপ্রহরীর লাশ উদ্ধার হলো।

এর আগে গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে বিসিক শিল্পনগরীর মাছু অ্যান্ড সন্স ইন্ডাস্ট্রির সেপটিক ট্যাংক থেকে আবদুল হান্নান (৪৫) ও সামসুল হক (৬৬) নামের দুই নৈশপ্রহরীর লাশ উদ্ধার হয়। পরে পুলিশ এ হত্যা রহস্য উদ্‌ঘাটনে মাঠে নামে। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে আসে, কারখানার ঢালাইসামগ্রী অতিরিক্ত নিতে বাধা দেওয়ায় এবং মালিকের কাছে ফাঁস করার হুমকি দেওয়ায় ট্রাকের চালক, হেলপার ও সাবেক কর্মচারী পরিকল্পিতভাবে ওই দুই নৈশপ্রহরীর মাথায় আঘাত করে হত্যা করেন। পরে লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন। হত্যার ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে তাঁরা অপহরণ নাটক সাজান। নিহত এক নৈশপ্রহরীর মুঠোফোন থেকে তাঁর পরিবারের কাছে খুদে বার্তা পাঠিয়ে মুক্তিপণের অর্থ পাঠাতে বলেন।

নিহত আবদুল হান্নানের বাড়ি বগুড়া সদরের নামুজা ইউনিয়নের বড় সরলপুর গ্রামে এবং নিহত সামসুল হকের বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থান প্রতাপপুর গ্রামে। ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ট্রাকচালক বিন মিল্লাত ওরফে নিনজা (৩৪) বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার চকলোকমান এলাকার মৃত মিসবাহুল মিল্লাত নান্নার ছেলে। হেলপার রাহাত প্রামাণিক (২১) বগুড়া শহরের নারুলী তালপট্টির বদিউজ্জামান প্রামাণিকের ছেলে এবং সাবেক কর্মচারী সুমন ব্যাপারী (২৭) একই এলাকার সায়েদ হামান ব্যাপারীর ছেলে।

এ ছাড়া গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর বিসিক শিল্পনগরীর আরেক নৈশপ্রহরী আলাউদ্দিন আলীর (৭০) লাশ এক কিলোমিটার দূরে সুবিল খাল-সংলগ্ন সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজের সামনের সড়ক থেকে উদ্ধার করা হয়। আলাউদ্দিনের বাড়ি শহরের সুলতানগঞ্জপাড়া উটের মোড় এলাকায়। তিনি বগুড়া বিসিক শিল্পনগরীর প্রধান ফটকে নৈশপ্রহরী ছিলেন।

পুলিশ তখন জানায়, বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় রাতের পালায় ডিউটি পালন করতে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন নৈশপ্রহরী আলাউদ্দিন। সকালের দিকে তাঁর লাশ পড়ে ছিল সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজের সামনের সড়কে।