অভিযোগ দেওয়ার ১১ দিন পরও ব্যবস্থা না নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

ধর্ষণ চেষ্টায় অভিযুক্ত শিক্ষককে স্থায়ীভাবে অপসারণের দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। আজ বেলা ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনেপ্রথম আলো

ধর্ষণ চেষ্টায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার ১১ দিন পার হলেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারণ ও তাঁর বিরুদ্ধে মামলা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও তাঁরা ঘোষণা দেন। আজ রোববার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শুরু হয়। বেলা তিনটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের কার্যালয় রয়েছে।

বিক্ষোভে রসায়ন বিভাগের অন্তত ২০০ শিক্ষার্থী বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে অংশ নেন। এ সময় তাঁরা প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে নানা ধরনের স্লোগান দেন।

জানতে চাইলে রসায়ন বিভাগের চার শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের দুটি দাবি। একটি অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে স্থায়ী অপসারণ, আরেকটি প্রশাসনকে বাদী হয়ে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় মামলা করা। এ দাবি পূরণ না হওয়ার পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, অভিযুক্ত ওই শিক্ষক ছাত্রীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিভিন্নভাবে হেনস্তা করেছেন। অশালীন এসএমএস, ভিডিও কল দিয়ে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করতেন তিনি। অনেক সাবেক ছাত্রী এসব ঘটনার ভুক্তভোগী। সব মিলিয়ে ওই শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের আসার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। তাঁরা এমন শিক্ষক চান না।

গত ৩১ জানুয়ারি রসায়ন বিভাগের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ দিয়েছিলেন বিভাগের এক ছাত্রী। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই ক্লাস বর্জন করে কর্মসূচি পালন করছেন রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাংশ ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরাও সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন। ওই অধ্যাপককে সাময়িকভাবে অপসারণ করেছে কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হেনস্তা, যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণচেষ্টার মতো ঘটনার বিচার হয় দুটি কমিটির মাধ্যমে। একটি অভিযোগ কমিটি, আরেকটি যৌন নিপীড়ন নিরোধ সেল। কোনো ছাত্রী অভিযোগ দিলে প্রথম তদন্তটি করে অভিযোগ কমিটি। এ কমিটি অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকার নিয়ে যৌন নিপীড়ন নিরোধ সেলে প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর নিরোধ সেল প্রতিবেদন যাচাই–বাছাই করে শাস্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করে। পরে সেটি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট অনুমোদন দেয়।

ধর্ষণচেষ্টার এ ঘটনা এখনো অভিযোগ কমিটি তদন্ত করছে। জানতে চাইলে অভিযোগ কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের পরিচালক জরিন আখতার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা আজ প্রতিবেদন জমা দিতে পারবেন না। দু-এক দিন সময় লাগতে পারে। এখন প্রতিবেদন লেখা ও সম্পাদনার কাজ করছেন। এটি সম্পন্ন হলে তাঁরা জমা দেবেন।