মঞ্চে শিশুদের নাটক বেচারাম কেনারাম
টাকা চুরির অভিযোগে কেনারামের বিচার বসল। অভিযোগকারী মুনিব বেচারামও রয়েছে অপর কাঠগড়ায়। একসময় এজলাসে বসা বিচারক কেনারামকে শাস্তির ভয় দেখিয়ে বললেন, ‘তোমার কী শাস্তি হতে পারে জানো?’ তখন কেনারাম ছুড়ে দিল কয়েকটি বাক্য, ‘শাস্তি-টাস্তি তো সব আপনাদের হাতে। আপনারা চোরকে সাধু করতে পারেন। সাধুকে আবার চোরও বানাতে পারেন।’
উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর রচনা অবলম্বনে নাটক ‘বেচারাম কেনারাম’-এর দৃশ্য এটি। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে দীপ্ত চক্রবর্তীর নির্দেশনায় এই নাটকের মঞ্চায়ন হয়। ফেইম শিশু নাট্য বিভাগের আয়োজনে এর নাট্যরূপ দিয়েছেন নাট্যজন অসীম দাশ ও দীপ্ত চক্রবর্তী। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত দুটি মঞ্চায়ন হয় নাটকটির।
নাটকটির কাহিনি আবর্তিত হয়েছে এভাবে—দীর্ঘদিন ধরে বেচারামের অধীনে কাজ করে কেনারাম। কিন্তু কাজের বেতন পায় না কেনারাম। নানা টালবাহানায় মালিক বেচারাম সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। তারপর একদিন টানা তিন বছরের বেতন পেয়ে বেরিয়ে পড়ে কেনারাম। পথে দেবদূতের কাছ থেকে পেয়ে যায় এক আশ্চর্য বেহালা। ঘটতে থাকে মজার সব কাণ্ডকারখানা। এই বেহালার সুর সবাইকে পাগল করে দেয়। বেহালায় টান পড়তেই নাচতে শুরু করে সবাই, সেটা কী বেচারাম, কী পুলিশ, কী বিচারক–চাপরাশি।
একসময় বেচারামের টাকা চুরির অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত কেনারামের ফাঁসির আদেশ দিলেন বিচারক। কেনারাম তখন সমাজ-দেশ-বিচারব্যবস্থা নিয়ে নানা প্রশ্ন ছুড়ে দেয়, ‘সমাজ এই নিয়ম বানায় আর আমরা নিয়মের ফাঁসির দড়ি গলায় তুলে নিই।...পৃথিবীটাকে বদলে দেওয়ার স্বপ্ন ছিল চোখে। কিন্তু এই সমাজ আমাদের শুধু চাকর বানায়। পার্থক্য শুধু একটাই, কেউ সিংহাসনে বসে আর কেউ ঝাঁটা হাতে তার ধুলো মুছে দেয়।’
নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন অর্চি অনিন্দিতা, দিব্য চক্রবর্তী, আরিয়ানা হক রোদেলা, আনা আভেরি পত্রলেখা, অরিত্র ঘোষ, শারদ প্রত্যুষ বল, প্রাণায়াম দত্ত, শীর্ষদ্বীপ বিশ্বাস, আদৃশা চৌধুরী, রাদওয়া হক আরসী, আয়ান ইব্রাহীম হক, মৃত্তিকা নন্দী, আদিত্য নন্দী ও প্রেক্ষা দাশ।