পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথে যাত্রী হ্রাস পাওয়ায় লঞ্চের ব্যবসায় চরম মন্দা যাচ্ছিল। এর ওপর দুই দফায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পুরো ব্যবসা ঝুঁকিতে পড়ে। এই ব্যবসায় বিনিয়োগ নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়। কিন্তু এত ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যেও বরিশাল-ঢাকা নৌপথে যুক্ত হয়েছে সুন্দরবন-১৬ নামের একটি বড় লঞ্চ।

গত বুধবার বিকেলে লঞ্চটির উদ্বোধন করা হয়। বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ এতে অতিথি হিসেবে ছিলেন। লঞ্চটির মালিকপক্ষ জানিয়েছে, আধুনিক সাজসজ্জা, নির্মাণশৈলি ও প্রযুক্তির ব্যবহার হয়েছে লঞ্চটিতে। আছে শীতাতপনিয়ন্ত্রণব্যবস্থা। হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ)। ওঠানামার জন্য আছে ক্যাপসুল লিফট। নিরাপত্তার জন্য আছে সিসিটিভি ক্যামেরা, শিশুদের জন্য বিনোদনের জায়গা, ফুডকোর্ট, ফার্মেসি, আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ও ওয়াই–ফাইয়ের ব্যবস্থা।

লঞ্চটির নির্মাণপ্রতিষ্ঠান সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানির মালিকানায় নৌপথে আরও ১৫টি লঞ্চ চলাচল করছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, দেশের সবচেয়ে বেশি যাত্রী ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ও আকারে বড় নতুন এই লঞ্চ।

লঞ্চটিতে হৃদ্‌রোগে আক্রান্তদের জন্য রয়েছে করোনারি কেয়ার ইউনিট। ওঠানামার জন্য আছে ক্যাপসুল লিফট
ছবি: সংগৃহীত

সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানির ব্যবস্থাপক আবুল কালাম বলেন, ৪ তলা লঞ্চটির দৈর্ঘ্য ৩৬০ ফুট ও প্রস্থ ৬০ ফুট। এতে লোয়ার ডেক, আপার ডেক ও আড়াই শতাধিক প্রথম শ্রেণির কক্ষ (কেবিন) ছাড়াও ৬টি ভিআইপি ও ১০ সেমি ভিআইপি কক্ষ আছে। এর যাত্রী ধারণক্ষমতা ১ হাজার ৩৫০ জন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন লঞ্চ সংযোজনের বিষয়ে সুন্দরবন নেভিগেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান বলেন, লঞ্চটি অনেক আগেই নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে গত ঈদুল আজহার আগেই চলাচল শুরু হতো। কিন্তু পদ্মা সেতুর উদ্বোধন এবং যাত্রী অনেকটা কমে যাওয়ায় তখন উদ্বোধন করা হয়নি। তিনি বলেন, যাত্রী ধরে রাখতে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এতে। লঞ্চটি টিকে থাকতে পারবে বলে আশা করেন তিনি।