শেষ মুহূর্তে এলেন পৌর মেয়র, নির্ধারিত সময়ের পরও ভোট গ্রহণ

জেলা পরিষদ নির্বাচন

ঘড়ির কাঁটায় তখন বেলা দুইটা ছুঁই ছুঁই। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে কয়েকজন ভোটারকে সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রে এলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পৌর মেয়র শিব শংকর দাস। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী, বেলা দুইটায় ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কেন্দ্রে ভোটার থাকায় বেলা পৌনে তিনটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলেছে।

আজ সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে নবীনগর উপজেলা পরিষদ ভোটকেন্দ্রের চিত্র এটা। এর আগে সকাল ৯টা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৯টি উপজেলার ৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। তবে জেলার কোথাও কোনো ধরনের অনিয়ম বা বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি।

আজ বেলা দুইটা বাজার কিছুক্ষণ আগে কাউন্সিলরদের নিয়ে নবীনগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আসেন নবীনগর পৌরসভার মেয়র শিব শংকর দাস। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত কেন্দ্রে ৯ জন ভোটার উপস্থিত ছিলেন। বেলা পৌনে তিনটা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলে। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ২৮৮। ভোট দিয়েছেন ২৮৩ জন।

এর আগে সকাল নয়টায় আখাউড়া উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের বাইরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবর্তীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। প্রত্যেক ভোটার এবং গণমাধ্যমকর্মীর পরিচয় ও পরিচয়পত্র যাচাই করে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার অনুমতি দেন তিনি। ভেতরে দাঁড়ানো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমাও দ্বিতীয় দফায় সবার পরিচয় যাচাই করেন।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল আলম বলেন, কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা চোখে পড়েনি। কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থায় তিনি খুশি। জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।

সকাল থেকেই আখাউড়া সদর, নাসিরনগর, নবীনগর, বিজয়নগর, বাঞ্ছারামপুর ও আশুগঞ্জ উপজেলার ভোটকেন্দ্রের বাইরের সড়কে প্রার্থী, ভোটার ও কর্মী-সমর্থকদের ভিড় ছিল। ভোটার ছাড়া কাউকেই কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ভোটকক্ষের বাইরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বারবার ভোটার ও জনপ্রতিনিধিদের মুঠোফোন না নিয়ে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের অনুরোধ জানান।
আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই নির্বাচনে আমরা খুশি। কারণ, ভোটাররা শান্তিতে ও নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারছেন।’

জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৯টি কেন্দ্রের ১৮টি কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে অস্ত্রধারী ৭ জন পুলিশ, ২৬ জন করে আনসার সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ৪০০ সদস্য দায়িত্ব পালন করেছেন।

নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল। কোথাও কোনো ধরনের অনিয়ম বা বিশৃঙ্খলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। ‍এই নির্বাচন একটি দৃষ্টান্ত। কমিশনের নির্দেশনা এখানে বাস্তবায়িত হয়েছে।