জেলা পরিষদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির এক প্রার্থীর প্রস্তাবক ও সমর্থনকারীকে আটক রেখে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মিথ্যা তথ্যের হলফনামা জমা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নাটোর ইউনাইটেড প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতা ও জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নূরুন্নবী মৃধা।
সংবাদ সম্মেলনে জাপা প্রার্থী মনিরুল প্রতিপক্ষের কথা বললেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর নাম নেননি। তবে অভিযোগের জবাব দিতে রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাজেদুর রহমান খান। সেখানে তিনি দাবি করেন, জাপা প্রার্থীর এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
গতকাল সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে জাপা নেতা মো. নূরুন্নবী মৃধা বলেন, তাঁর প্রস্তাবক ও সমর্থনকারীকে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর লোকজন রাস্তা থেকে অপহরণ করে আটকে রাখে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে জোর করে সমর্থন প্রত্যাহারের হলফনামা লিখে নিয়ে তা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করা হয়। ফলে তাঁর মনোনয়নপত্র যাচাই–বাছাই শেষে বাতিল করা হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচন করতেই জন্যই প্রতিপক্ষ প্রার্থী এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে তাঁর অভিযোগ। ঘটনাটির বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে পুনরায় তফসিল ঘোষণার দাবি জানান তিনি।
মো. নূরুন্নবী মৃধা বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে অবসর গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে তিনি নাটোর জেলা জাতীয় পার্টির (জি এম কাদের) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক। এর আগে নাটোর পৌরসভা নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান।
নূরুন্নবী মৃধার সংবাদ সম্মেলনের পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে তড়িঘড়ি করে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাজেদুর রহমান খান। তাঁকে পাশে বসিয়ে রেখে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, নূরুন্নবী মৃধা সংবাদ সম্মেলনে যেসব অভিযোগ করেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রস্তাবক ও সমর্থনকারীকে অপহরণ বা আটক করা হয়নি। তাঁরা নিজেরাই রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে হলফনামা দিয়ে বলেছেন, তাঁদের ভুল বুঝিয়ে মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। তাঁরা তাঁদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী তাঁর প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা (জেলা প্রশাসক) শামীম আহমেদ বলেন, মো. নূরুন্নবী মৃধা তাঁর কাছে লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি। যাচাই–বাছাইকালে তিনি তাঁর প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারীকে হাজির করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁর প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী দুই দফায় তাঁর কার্যালয়ে এসে হলফনামা দিয়ে বলেছেন, ভুল বুঝিয়ে তাঁদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। তাই নিয়ম অনুযায়ী তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তিনি এ আদেশের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের (রাজস্ব) কার্যালয়ে আপিল করতে পারবেন।
একই কারণে অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী রায়হান শাহের মনোনয়নপত্রও বাতিল করা হয়েছে। ফলে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাজেদুর রহমান খানের আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী থাকল না।